গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এসময় পরিবারের আহাজারিতে কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে মানববন্ধনস্থল।
হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে শনিবার সকালে উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করেন ওই কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
১৯ বছর বয়সী আল-আমিন উপজেলার বরিয়াবহ এলাকার মোতালেব হোসেনের ছেলে। তিনি কলেজটির ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ও দ্বাদশ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
নিহতের বাবা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘এ কেমন নোংরা রাজনীতি? মায়ের বুক খালি হলো! ছেলেকে হারিয়ে আমার যে কী যন্ত্রণা, তা আমি জানি! আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখানে স্বাক্ষীর দরকার নাই, সিসি ক্যামেরার ভিডিও স্বাক্ষী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
এসময় কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নিহতের বৃদ্ধ নানা আমছের আলী।
তিনি বলেন, ‘আমার একটা মাত্র নাতি গো! আমার নানা মরল কেন? যারা নানা ভাইরে মারছে, তাগো ফাঁসি চাই।’
নানা প্রলাপে আহাজারি করেন নিহতের বৃদ্ধা দাদী মোহরজান, বড় ফুফু আসমা বেগম, মামা হারুন মিয়াসহ স্বজনরা।
পরিবারের সদস্য ছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরহাদ হোসেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদ কামাল সোহানসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী।
তারা বলেন, যুবলীগ নেতা রফিকুল ও ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনলে আর এমন নৃশংস ঘটনা ঘটবে না। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আল আমিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করলে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দেয়া হবে। এ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইউএনওসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেয়া হবে বলে জানান তারা।
এসময় ‘আল আমিন মরলো কেন? জবাব চাই’, ‘প্রশাসন চুপ কেন? জবাব চাই’সহ নানা স্লোগানের ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। মিছিলটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও চন্দ্রা-বলিয়াদি আঞ্চলিক সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধন শেষে রোববার কলেজের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচির ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার কালিয়াকৈরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা আল আমিন হোসাইনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্র সংগঠনটির এক পক্ষের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে, কালিয়াকৈর থানার এসআই জামিনুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতে উপজেলার কালামপুর এলাকা থেকে কালিয়াকৈর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উপজেলার কালামপুর এলাকার মোতালেব মিয়ার ছেলে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম জানান, আল আমিনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মিলন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।