বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণায় মাছের খামারে অভিযান চলছে

  • প্রতিনিধি, নেত্রকোনা   
  • ৮ জুন, ২০২৪ ২০:৫৫

নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। তবে গ্রামটির একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে রয়েছে একটি হাওর।

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের একটি মাছের খামার ঘিরে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শনিবার বেলা ১টা থেকে নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামে মাছের খামারটি ঘিরে অভিযান শুরু হয় বলে জানান জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চারদিক থেকে খামারটি ঘিরে ফেলে।’

জানা যায়, নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। তবে গ্রামটির একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে রয়েছে একটি হাওর।

শনিবার বিকেলের দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারের ফটক বন্ধ। ভেতরে একটি দোতলা বাড়ি এবং তার পাশে আরেকটি টিন শেড ঘর রয়েছে। বাড়িটি চারদিক থেকে সীমানা করা। ভেতরে প্রচুর গাছপালা রয়েছে। বাড়ির দুই পাশেই খালি ধানের ক্ষেত; সামনে দিয়ে রাস্তা গেছে। চারদিক থেকে খামারটি ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশের অভিযান দেখতে গ্রামের উৎসুক কিছু লোকজনও সেখানে রয়েছে।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই বাড়িটি নজরদারিতে আনা হয়। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার বাড়িটিতে একদফা অভিযানও চালানো হয়েছে। অভিযানে একটি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, একটি ডামি একে ৪৭ বন্দুক ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, ‘শনিবার ময়মনসিংহ থেকে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা এখানে এসে পৌঁছান। তারা এরই মধ্যে ভেতরে প্রবেশে করে সেখানে অভিযান চালাচ্ছেন।

‘প্রাথমিক তথ্যে মনে হচ্ছে, জঙ্গিরা এই জায়গাটিকে তাদের প্রশিক্ষণের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করত। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘বাড়িটির মালিক অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ড. আব্দুল মান্নান। তার বাড়ি জেলার আটপাড়া উপজেলার স্বরমশিয়া ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামে। তবে তিনি গাজীপুরে থাকেন। দুই বছর আগে আরিফ নামের এক ব্যক্তিকে বাড়িটি ভাড়া দেয়া হয়। তবে বাড়িতে তাকে পাওয়া যায়নি।’

পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদ উল্লাহ চৌধুরীসহ সাত সদস্য এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খামার থেকে বেরিয়ে আসাদ উল্লাহ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি একটি প্রশিক্ষণ শিবির। তবে, ভেতরে কেউ নেই। হয়তো যারা ছিলেন, পালিয়ে গেছেন।’

কেন প্রশিক্ষণ শিবির মনে হচ্ছে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ‘ভেতরে আমরা ব্যায়াম করার কিছু জিনিসপত্র পেয়েছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, ‘বোমা তৈরির কোনো সরঞ্জাম বা আলামত এখনও আমরা পাইনি। তবে সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, এই বাড়িটির মালিক গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মান্নান। তিনি প্রায় ২৫ বছর আগে এই দোতলা বাড়িটি তৈরি করেন। তবে বাড়িটি ভাড়া দেন আট বছর আগে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, বাড়ির ফটক প্রায় সবসময় বন্ধই থাকত। মাঝে মাঝে অপরিচিত দুয়েকজন লোক সেখান থেকে বের হতেন।

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা রওনা হয়েছেন। তারা রাতেই এসে পৌঁছাবেন।

এ বিভাগের আরো খবর