সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় নেপালে আটক সিয়াম হোসেনকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রয়োজনে আবারও কলকাতা যাবে ডিবি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ শনিবার একথা জানান।
রাজধানীর মিণ্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, ‘এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদকে আটক করা হয়েছে। তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
‘গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে। তবে এখনও তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে যদি এই হত্যাকাণ্ডে তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তবে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য এমপি আনারের পরিবারের সদস্যরা দ্রুতই ভারতে যাবেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।
‘ভারতের তদন্ত কর্মকর্তারাও পরিবারের সদস্যদের নাম ও মোবাইল নম্বর নিয়েছেন। শিগগিরই তারা ডাকবেন। যদি তারা ডাকেন তবে ধরে নিতে হবে যে ডিএনএ টেস্টের জন্যই ডেকেছেন।’
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের হোতা হিসেবে আখতারুজ্জামান শাহীনের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে। তাকে ফেরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘শাহীন নেপাল থেকে দুবাই হয়ে আমেরিকা চলে গেছে। ভারতে যখন ছিলাম সেখানকার পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে, বৈঠক হয়েছে। হত্যার ঘটনাটা যেহেতু ভারতে ঘটেছে সেহেতু শাহীন তাদের কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড। আমরাও কাজ করছি, তারাও কাজ করছে।
‘শাহীনকে ফেরানোর ব্যাপারে আমরা পুলিশ সদর দফতরে এনসিবি’তে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তারা হয়তো ইন্টারপোলের কাছে এসব বিষয় জানিয়েছে। বাংলাদেশের অ্যাম্বাসির সঙ্গে আমরা কথা বলছি। তবে এটুকু বলতে পারি যে আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা যেখানে যেভাবে জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
ডিবি প্রধান বলেন, ‘নেপালে আটক হওয়া সিয়ামকে ভারত নিয়ে গেছে। আনারকে হত্যা করে পৈশাচিক কায়দায় গুম করার বিষয়টি জানে সিয়াম ও জিহাদ। এ দুজনই এখন তাদের কাছে রয়েছে। তাদের সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে আমরাও সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
‘সিয়াম নেপালে আছে- সেই তথ্য পাওয়ার পর আমরা এনসিবিকে চিঠি লিখি। এনসিবি দ্রুত কাঠমান্ডু এনসিবিকে তথ্য পাঠিয়ে সিয়ামকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে বলে। পরে সেদেশের পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে।’
তিনি বলেন, ‘কাঠমান্ডুতে গিয়ে অপরাধীরা লুকিয়ে থাকে, মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে। সেখানে অপরাধের একটা রুট হয়ে গেছে। নেপালের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন হোটেলে গিয়েছি। সব তথ্যই নিয়ে এসেছি।
‘আমরা মনে করি এটা আমাদের একটা অর্জন। কারণ তাদেরকে আমরা তথ্য দিয়েছি। ভারতও কাজ করছে। দুই দেশের তদন্ত কর্মকর্তারা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার কারণে ভালো ফল আসছে। আমরা যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি, তারা ইতোমধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।’
বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের ভারত নিয়ে যেতে পারবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ‘সেটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কথা বলতে হবে। আমরা আগেও যখন ভারতে গিয়েছি তখন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গিয়েছি।’