আসন্ন ঈদুল আজহার সময় রাজধানীতে বাসাবাড়ি, মার্কেট ও বিপনি বিতানে যেকোনো ধরনের অপরাধ, বিশেষ করে চুরি ঠেকানোর জন্য নগরবাসীকে সচেতন করতে বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যরা। এসময় আটটি বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার জুমার নামাজের সময় এই পরামর্শ দেয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশনায় রাজধানীর ৫০টি থানা এলাকাতে এই পরামর্শ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (ক্রাইম) আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপি জানায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বাসিন্দাদের অনেকেই গ্রামের বাড়িতে যাবেন। এ সময় অনেক বাসায় চুরি বা ডাকাতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গত ঈদুল ফিতরের বন্ধের সময় রাজধানীতে প্রায় অর্ধশত বাসায় সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এজন্য এবারের ঈদুল আজহার বন্ধের সময় রাজধানীর বাসিন্দাদের সচেতন থাকার জন্য মসজিদে জুমার নামাজের সময় সচেতনতামূলক বক্তব্য দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নগরবাসীকে সচেতন করতে আটটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বিষয়গুলো হলো-
১. গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন, পানির লাইন, সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বাসা থেকে বের হওয়া
২. অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে এসে দরজা-জানালা খুলে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ অন না করা
৩. বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। আগে স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সচল আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা
৪. চোর রাতের বেলায় বাসার পেছনের অংশ দিয়ে জানালা ভেঙে চুরি করে। এজন্য বাসার পেছনেও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে; বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
৫. নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক অথবা কাছের আত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রাখতে হবে।
৬. রাতে বা দিনে মাস্ক কিংবা ক্যাপ অথবা একসঙ্গে মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ পরা অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিতে হবে এবং
৭. মোটরসাইকেল বা যানবাহন চুরি রোধে অ্যালার্ম লাগাতে হবে। আর মোটরসাইকেলের লকে স্টিলের তৈরি মেরিন অ্যাংকর চেইন ব্যবহার। প্রয়োজনে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে
৮. ভিন্ন জায়গায় শয়তানের নিশ্বাস বা ডেভিল ব্রেথ নামে এক ধরনের ড্রাগ দিয়ে মানুষকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে অপরাধীরা। এজন্য অপরিচিত কেউ কোনো কার্ড কিংবা কাগজ দেখিয়ে কোনো ঠিকানা বা তথ্য জানতে চাইলে কিংবা রুমাল বা অন্য কোনো কিছু মুখের কাছে আনার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে মুখ সরিয়ে নিতে হবে।
প্রয়োজনে আশপাশের লোকজনের সহায়তা নিতে হবে। চোরেরা রাতে অন্ধকার থাকা বাসা টার্গেট করে। তা নিয়ে সতর্ক ব্যবস্থা নিতে হবে।