ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলার আরও এক আসামিকে নেপাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছ।
গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকে এরই মধ্যে নেপাল কর্তৃপক্ষ কলকাতা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে তিনি বলেন, নেপাল পুলিশ সিয়ামকে কলাকাতার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। সেখানকার সিআইডি সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
এ ছাড়া কলকাতা সিআইডির কাছে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরও দুজন গ্রেপ্তার আছেন বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, কলকাতা সিআইডি হত্যা মামলাটি তদন্ত করেছে। তাদের কাছে দুজন আসামি আছেন। একজনকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে। অন্যজনকে নেপাল থেকে নিয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা তদন্ত করছি, কলকাতা পুলিশও তদন্ত করছে।
এমপি আনোয়ারুল আজীম হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত দুই দেশ সবমিলিয়ে মোট পাঁচজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদের মধ্যে সর্বশেষ গ্রেপ্তার সিয়াম ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা থেকে পুলিশের একটি তদন্ত দল সিয়ামকে ফিরিয়ে আনতে সম্প্রতি নেপালে যায়। তারা দেশে ফিরে আসেন তদন্ত শেষে, তবে সিয়ামকে ফেরানো নিয়ে তারা কিছু বলেননি।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ভারতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন তিনি। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন আনার। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগরের বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পাঁচদিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এই সংসদ সদস্যের।
চারদিন পর হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে সেখানে মরদেহ মেলেনি।
আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা করেন।
এক পর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ড তদন্তে নামে ভারত ও বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তিনজন গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশে। আর কলকাতায় গ্রেপ্তার হন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদ। জিহাদকে রিমান্ড দিয়েছে ভারতের বারাসাতের আদালত।