বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা না করেই কোটালীপাড়ায় সেতু নির্মাণ, ভোগান্তি

  • মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)   
  • ৫ জুন, ২০২৪ ২৩:৫৩

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। প্রকল্পটিতে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কোনো ব্যয় রাখা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা হয়েছে। দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হবে।’

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কুশলা খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক কেটে সড়ক ও নৌপথ বন্ধ করে চলছে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ। বিকল্প সংযোগ সড়ক বা অস্থায়ী সেতুর ব্যবস্থা না করেই বর্তমান সেতুর সংযোগ সড়ক কেটে ফেলায় ২০ দিন ধরে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ আপামর জনসাধারণ।

সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সেতুর দুই পাড়ে থাকা শিক্ষার্থী, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা।

সেতুটির সংযোগ সড়ক কেটে ফেলার আগে বিকল্প যোগাযোগের ব্যবস্থা কেন করা হলো না- জানতে চাইলে একে অপরকে দুষছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ৩ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার ৩৮৩ টাকা ব্যায়ে মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়কের কুশলা খালের ওপর ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ পায় ‘বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বুধবার সকালে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০ দিন আগে শুরু হয়েছে প্রকল্পের কাজ, যা শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমান সেতুটি ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক মাস আগে এখানে নতুন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুতেই সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়ক কেটে ফেলায় সকল প্রকার চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কুশলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পল্লী চিকিৎসক হাফিজুর রহমান জানান, নতুন সেতু নির্মাণের জন্য বর্তমান সেতুর সংযোগ সড়ক কেটে দেয়ায় পণ্য পরিবহনসহ সকল প্রকার যোগাযোগে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। গ্রামের সরু রাস্তা দিয়ে ২-৩ কিলোমিটার ঘুরে ভ্যানযোগে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করলেও ব্যবসায়িক পণ্যসহ ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে রাধাগঞ্জ বাজার হয়ে দোকানের মালামাল আনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, ‘সড়কটি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। দেশের ছোটখাটো যেকোনো সেতু নির্মাণের সময় বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে তারপর কাজ করা হয়, কিন্তু এখানে এত মানুষের চলাচল সত্ত্বেও কেন তা রাখা হলো না, তা বোধগম্য নয়।’

সেতু-সংলগ্ন কুশলা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল (বিএ) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বাকের হোসেন বলেন, ‘বিকল্প সড়ক না থাকার কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা খুব বিপদে পড়েছেন।’

মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফিজুর বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০ টাকা বেশি দিয়ে অন্য পথে ঘুরে মাদ্রাসায় আসতে হচ্ছে।’

টুটাপাড়া গ্রামের গৃহিনী হেলেনা বেগম বলেন, ‘সেতুর সঙ্গেই কুশলা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখানে চিকিৎসা নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। প্রকল্পটিতে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কোনো ব্যয় রাখা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা হয়েছে। দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হবে।’

কুশলা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ কালু বলেন, ‘বিকল্প সড়ক না করে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা দুঃখজনক। দাপ্তরিক ব্যস্ততার কারণে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে আজই নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলব।’

এলজিইডির কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম বলেন, ‘ওয়ার্ক অর্ডারে বিকল্প সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে, বিষয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বুঝতে পারে নাই। দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে দেয়ার জন্য আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনুর আক্তারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর