জামালপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য ৬৫ বছর আগে খনন করা হয় গবা খাল। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করা ও বিভিন্ন অংশ বেদখল হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয় শহরবাসী। দীর্ঘদিন পর খালটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ।
নগরায়ন করতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন জরুরি। ৬৫ বছর আগের পরিকল্পনা শুধুমাত্র তদারকির অভাবে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তখন শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি খালের পানি ব্যবহার করে কৃষিকাজ ও মৎস্য শিকার ছিল খালের অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার বা পরিষ্কার না করায় খালের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অবশেষে খালটিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে।
জামালপুর পৌরসভা ও সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের এই খালটি পৌর শহরের শেখেরভিটা এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের মনিরাজপুর, ছুটগড় হয়ে কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি, দামেশ্বর হয়ে ঝিনাই নদীতে গিয়ে শেষ হয়েছে।
শহরের পানি নিষ্কাশন ও বর্ষকালে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেন জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। এরপর থেকেই জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, পৌরসভাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ গ্রহণ করে।
‘গ্রীণ জামালপুর, ক্লিন জামালপুর’-এর অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে গবা খালের ৫টি পয়েন্টে প্রাথমিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হয়। শহরের শেখেরভিটা এলাকায় খালের উৎসমুখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজের নেতৃত্ব দেন এমপি আবুল কালাম আজাদ নিজেই।
এসময় জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তিন শতাধিক সদস্য অংশ নেন।
সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নানা প্রকার বর্জ্যের কারণে গবা খালটির প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এই খালটিকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা আজ এটা শুরু করলাম। তবে একদিনেই পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।
‘প্রশাসন, পৌরসভা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনসাধারণ- সবাইকে নিয়ে সবার সহযোগিতায় কাজটি করতে হবে। খালের আশপাশে যারা বসবাস করেন তাদের সচেতন হতে হবে। ডাস্টবিনের পরিবর্তে খালের ভেতর সরাসরি বর্জ্য ফেলা হলে খালটি আবার বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার শহর আমার পরিষ্কার রাখতে হবে- এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।’
পৌর মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘জামালপুর পৌর এলাকার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গবা খালের ৫ কিলোমিটার অংশ পৌর কর্তৃপক্ষ ও কেন্দুয়া ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বাকি ৭ কিলোমিটার অংশটুকু পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিষ্কার করবে। এই খালটি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে। আশা করি শহরের জলাবদ্ধতা অনেকটাই নিরসন হবে।’