ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার বৃষ্টির কারণে মাদরাসায় উপস্থিত না হতে পারায় এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গত সোমবার ওই শিক্ষার্থীকে পেটানোর পর মঙ্গলবার রাতে থানায় অভিযোগ করেন তার বাবা। এর পরই পালিয়ে গেছেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।
বুধবার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল হক।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরাফাত ইসলাম রায়হান (১২) আশুলিয়ার কান্দাইল নয়াপাড়া এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক কামরুল ইসলামের ছেলে। পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় বসবাস করে স্থানীয় কান্দাইল হাকিম মার্কেট এলাকার কান্দাইল আবরার কাউনিয়া মাদ্রাসায় লেখা পড়া করে সে।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. নাঈম। তবে তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীর শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ওই মাদরাসায় আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। আমার ছেলেকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আবাসিকে রাখতে চাইলে ছেলে রাজি হয়নি। সে দেড় বছর ধরে বাসায় থেকে ওই মাদরাসায় লেখাপড়া করতো।
তিনি বলেন, গত সোমবার সকালে ছেলেকে মাদরাসায় দিয়ে আমি কাজে যাই। রাতে বাসায় ফিরে দেখি ছেলে হাঁটতে পারছে না। পরে দেখি কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত জখমের দাগ। ছেলের কাছে জানতে চাইলে মারধরের বর্ণনা দেয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
শিক্ষার্থীর বাবার আরও বলেন, পরদিন মঙ্গলবার সকালে ছেলেকে নিয়ে মাদরাসায় গিয়ে মারধরের কারণ জানতে চাইলে উল্টো তারা আমার ছেলেকেই অপরাধী বানায়। আমার ছেলে নাকি শিক্ষককে ধাক্কা দিয়েছে। তা তাকে শাসন করা হয়েছে। এ সময় মাদরাসার সভাপতি মনির, প্রিন্সিপাল ও পিয়ার আলীর উপস্থিতিতে আমার ছেলেকে ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। বিচার না পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই আশুলিয়া থানায় আমি লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মাদরাসায় গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাঈমকে আটক করতে পারেনি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
ওই শিক্ষার্থী বলে, রোববার বৃষ্টির কারণে মাদরাসায় যেতে পারিনি। সোমবার বাবা আমাকে মাদরাসায় দিয়ে কাজে যায়। পরে রোববার মাদরাসায় না আসার কারণে আমাকে পিটিয়ে আটকে রাখে হুজুর। সন্ধ্যার দিকে সবাই মাগরিবের নামাজ আদায় করতে গেলে আমি পালিয়ে বাসায় যাই।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহার বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি মিমাংসা করে নিয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতাল ভর্তি রয়েছে।
তবে ভুক্তভোগীর বাবা কামরুল ইসলাম মিমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।