নিখোঁজের ১৭ দিন পর নওগাঁ সদর উপজেলার বাড়িতে ফিরছে এক শিশু।
ঢাকা থেকে শিশুটিকে নিয়ে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তার অভিভাবক।
শিশুটির বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে। তার বাবা পেশায় একজন কৃষক।
শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে শিশুটি।
গত ১২ মে দুপুরে বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করছিল শিশুটি। ওই সময় তার বাবা ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। বাবাকে দেখে ভয় পেয়ে সেদিন আর বাড়ি ফিরে যায়নি সে। এদিকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশুটি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাননি।
গত ২৮ মে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকার উত্তরায় মেট্রো রেলের পাশে চায়ের দোকানে শাকিব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি শিশুটিকে দেখে পরিচয় জানতে চান। এরপর শিশুটি জানায়, তার বাড়ি নওগাঁর শিমুলিয়া গ্রামে। পরে শিশুটির ছবি তুলে অভিভাবকদের সন্ধান চেয়ে সাদিয়া সারওয়ার নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আপলোড করা হয়। সেই পোস্টের মাধ্যমেই শিশুটির সন্ধান পান তার বাবা।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘সে আমার একমাত্র ছেলে। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে না পেয়ে অবশেষে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। হঠাৎ করে গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুকের মাধ্যমে ছেলের খোঁজ পাওয়া যায়। এরপর ফেসবুকের তথ্যসূত্রে ঢাকায় গিয়ে ছেলেকে পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘নিখোঁজের দিনে ছেলে বাড়ি থেকে সান্তাহারে গিয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় চলে আসে। এরপর বিভিন্ন হোটেলে কাজ করত এবং রাস্তায় ঘুমাত। এভাবে কেটে যায় ১৭ দিন।
‘এরপর মানবিক ব্যক্তি শাকিব উদ্দিনের মাধ্যমে ছেলের খোঁজ পেয়ে ঢাকায় চলে আসি। ছেলেকে নিয়ে নওগাঁর পথে রওয়ানা দিয়েছি।’
শিশুটির সন্ধান দেয়া শাকিব উদ্দিনের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। তিনি ঢাকায় চালক হিসেবে কাজ করেন।
শাকিব বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা উত্তরা ১ নম্বর মেট্রোরেলের পাশে শিশু শাকিব উদ্দিন চায়ের দোকানে পানি পান করতে যায়। তাকে একা ঘুরতে দেখে দোকানি তার কাছে জানতে চায় বাড়ি কোথায়, তার সাথে কেউ আছে কি না। এর আগে দোকানিসহ আশপাশের লোকজন কেউ কখনও দেখেনি তাকে।
‘শিশু হওয়ায় দোকানিরা তাকে বসিয়ে রাখে। এ সময় আমি ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। লোকজনের ভিড় দেখে সেখানে জানতে চাইলে বলে শিশুটির বাড়ি নওগাঁতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমার বাড়ি নওগাঁ, লোকজনকে বলে শিশুকে বাসায় নিয়ে আসি। এরপর ছবি তুলে আমার মোবাইল নম্বরসহ ফেসবুকে আপলোড করা হয়। এরপর শিশুটির ছবি দেখে তার অভিভাবকরা আমার কাছে ফোন করে।
‘বুধবার সকালে শিশুটির বাবা ঢাকায় চলে আসেন। শিশুটি তার বাবাকে চিনতে পারায় বাবার জিম্মায় দেয়া হয়। দুপুরে বাসযোগে তারা নওগাঁর পথে রওনা হয়।’