পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী ও তিন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আগামী ৬ জুন বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রীকে এবং ৯ জুন তিন মেয়েকে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
দুদক থেকে মঙ্গলবার নোটিশ পাঠিয়ে তাদেরকে তলবের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধানে কমিটি করে দুদক।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ, জমি ও কোম্পানির শেয়ারের মালিকানা অর্জন করেছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার আদালত গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক স্বজনের নামে থাকা ৩৪৫ বিঘা (১১৪ একর) জমি ক্রোক বা জব্দের আদেশ দেয়।
এছাড়া বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে থাকা ৩৩টি ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয়া হয়।
আদালত গত রোববার বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে থাকা মাদারীপুরে ২৭৬ বিঘা (৯১ একর) জমি এবং বেনজীর পরিবারের নামে থাকা গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেয়। একই দিন বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসা করার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ করার আদেশ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদেরও নাম রয়েছে।