ভারতে চিকিৎসা করাতে হত্যার শিকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহের খণ্ডিতাংশ উদ্ধার হয়নি এখনও। উদ্ধার হয়নি তাকে যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে সেগুলোও। তবে এগুলোর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ভারতে এ সংক্রান্ত অভিযানে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, মরদেহের অংশ কীভাবে ও কোথায় ফেলা হয়েছে, তার খোঁজ চলছে। তবে যে অস্ত্রগুলো দিয়ে দেহের অংশ কাটা হয়েছিল, সিআইডি খালে ডুবুরি নামিয়ে সেগুলোরও সন্ধান চালাচ্ছে। দু দেশের পুলিশ এক সঙ্গে এই খুনের তদন্ত চালাচ্ছে।
সংবাদ প্রতিদিন বলছে, ট্রলিতে ভর্তি এমপি আনারের হলুদমাখা মরদেহের টুকরো হস্তান্তর হয়েছিল নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে। খুনের মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ ওই পাবলিক টয়লেটেই তার সঙ্গী জিহাদ হাওলাদারের হাতে তুলে দিয়েছিল ওই ট্রলি।
সোমবার জিহাদকে সঙ্গে নিয়েই ওই পাবলিক টয়লেটে হানা দেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এদিন জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটসহ ঘটনাস্থলসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়ে আনোয়ারুল আজিম আনার খুন ও তার দেহাংশ সরানোর ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের সঙ্গে ছিলেন ওয়ারি বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহিদুর রহমান। এ ছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের কর্মকর্তা, সিআইডি কর্মকর্তারাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন সকালে ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই জিহাদকে নিউ টাউনের অভিজাত বহুতলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। খুনের পর দেহের মাংস ও হাড় আলাদা করে ফেলে এই জিহাদ ও তার সঙ্গী সিয়াম। মাংস ও হাড় আলাদা করা হয়। একেকটি মাংসের টুকরো ছিল ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম।
পেশায় কশাই আন্দাজে মাংস কেটে তার সঙ্গে থাকা ছোট ওজনযন্ত্রে কয়েকটি মাংসের টুকরো ওজন করে দেখেও নিয়েছিল। আজিমের মাথা আধখানা করে তা-ও টুকরো টুকরো করে দেয়া হয়।
জিহাদের দাবি, মাথার টুকরো অন্য দুই অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর ও ফয়জল টুকরোর আলাদা ট্রলিতে ভরেছিল। ওই টুকরোগুলো দুজন বনগাঁ সীমান্তের কাছে যশোর রোডের ওপর ফেলে দেয়।
জিহাদকে নিয়ে গোয়েন্দারা নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে কোথায়ি এমপি আনারকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে খুন করা হয়, এর পর মেঝের কোন জায়গায় প্লাস্টিক পেতে তার দেহ জিহাদ ও সিয়াম টুকরো করতে শুরু করে, তার তদন্ত করেন গোয়েন্দারা।