উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সারা রাত তাণ্ডবের পর সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের তীব্রতা কমলেও কমেনি বৃষ্টি।
এদিকে রিমালের প্রভাবে জেলার অন্তত ৪৫ হাজার ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা প্রশাসক। এর মধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ও পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়ি-ঘর।
ঝড়ে উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা। এ ছাড়া জেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম ৬ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় অর্ধলক্ষ পরিবার।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ঘেরে। জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় সাড়ে তিন হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এতে ৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৫৮১ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলার মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলায় প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলায় সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব উপজেলার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পেয়েছি। আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাবে।
‘গতকাল রাতে জেলার ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ও কয়েক হাজার গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের জন্য শুকনা খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়োজন হলে নগদ অর্থ ও বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।’