বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে ঢেউয়ের তীব্রতা। প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে সতর্কতামূলক লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়তে শুরু করেছে, তবে পর্যটকরা যাতে গোসল করতে না নামে সেজন্য নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
পর্যটকদের বিচে না নামতে নিরুৎসাহিত করছেন সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা। তারপরও অনেক পর্যটককে লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীদের নির্দেশনা না মেনে সাগরে নামতে দেখা যায়।
পর্যটকরা বলছেন, ঝুঁকির মধ্যেও যতটুকু নিরাপদ থাকা যায়, সেই চেষ্টার মাধ্যমে তারা সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
এদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে কয়েকটি স্থানে দমকা হাওয়ায় গাছ পড়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ৬টার দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা বা মধ্যরাতের মধ্যে মোংলার নিকট দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
সমুদ্রবন্দরে সতর্কতামূলক সংকেতের বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পায়রা ও মোংলা বন্দরসমূহকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।’
জেলার ৬৩৮ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে শনিবার।
সভায় জানানো হয়, জেলার উপকূলীয় ৭টি উপজেলায় সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় জেলার ৬৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আট হাজার ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং দুই হাজার ২০০ জন সিপিপি কর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য।
দুর্যোগকালীন মানুষকে সহায়তার প্রস্তুতি সম্পর্কে মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য ৪৮৬ টন চাল, দুই লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা, ২৩ বান্ডিল ঢেউটিন, টিনের সঙ্গে গৃহনির্মাণের মজুরির জন্য ৬৯ হাজার নগদ টাকা মজুদ রয়েছে।