কলকাতায় বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় ভারতকে দোষারোপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে নিয়ে কথায় কথায় দোষারোপের রাজনীতি না করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের কলকাতায় খুন হওয়ার ঘটনায় বিএনপি নেতাদের সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বন্ধুরাষ্ট্রে গিয়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের তো জীবননাশ হয়নি। বন্ধুরাষ্ট্র নিয়ে কথায় কথায় দোষারোপের রাজনীতি না করতে আমি তাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বন্ধুরাষ্ট্রে গিয়ে নিরাপত্তা নেই- বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, ‘আপনাদের কাছে ভারত যদি শত্রুরাষ্ট্র হয়, সেখানে সালাউদ্দিন এতদিন কীভাবে নিরাপদে আছেন? তাকে তো কেউ হত্যা করেনি। তার জীবনের তো নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি। আপনারা এ ধরনের অপবাদ কেন দিচ্ছেন বন্ধুরাষ্ট্রকে?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। আমাদের একজন এমপি যখন চিকিৎসার জন্য সেদেশে যান, তিনি কিন্তু ভারত সরকারকে জানিয়ে যান না। সেখানকার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে গেলে নিরাপত্তার ব্যাপারটি তখনই দেখা হয়। এখানে বন্ধুরাষ্ট্রের...।
‘তাকে (আনোয়ারুল আজীম) যে ফ্ল্যাটটিতে হত্যা করা হয়েছে সেটি বাংলাদেশের কেউ ভিন্ন নামে কিনেছে। ওখানে পাঁচ-ছয়জনের মতো লোক এমপি আনারকে হত্যা করেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনই বাংলাদেশের। এই ব্যাপারটি নিয়ে...। যারে দেখতে নারি, চলন বাঁকা- এ ধরনের উক্তি করা সমীচীন নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘সাড়ে ৩৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। গাজার গণহত্যাকে যারা স্বীকার করে না, যারা গাজার গণহত্যার সহযোগী- এসব যদি গণতন্ত্রের অংশ হয় তাহলে তাদের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশের মাথাব্যথা নেই।
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর নিজস্ব নিয়ম-কানুন রয়েছে। সেখানে কেউ অপরাধী হলে তাদের ছাড় দেয়ার মতো লোক বঙ্গবন্ধু-কন্যা নয়।’
তিনি বলেন, ‘একসময় দেশের নারী ও তরুণরা আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এখন শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে এককথায় তারা নৌকায় সমর্থন ও ভোট দিচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের আসন্ন প্লাটিনাম জুবিলির অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের অনেক বড় ভূমিকা থাকবে বলে সভায় উল্লেখ করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।
সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনিসুল ইসলাম প্রমুখ।