আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সালমান ফজলুর রহমান এমপি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেছেন, ‘গত নির্বাচন নিয়েও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই নির্বাচন আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে পেরেছি। আগামীতেও সব ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে রোববার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সালমান ফজুলর রহমান এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজকের অবস্থায় নিয়ে এসেছেন। যখনই বিদেশে যাই, সব জায়গা থেকেই জানতে চাওয়া হয়- বাংলাদেশ এত উন্নয়ন কীভাবে করতে পেরেছে? তাদের বলি- শেখ হাসিনার ম্যাজিকের কারণেই আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি।
‘শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে আমাদের কী অবস্থা হতো, সেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমাদের ভাগ্য ভালো- তার মতো একজন নেতা ও প্রধানমন্ত্রী আমরা পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধের জন্য আমরা দায়ী না হলেও এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়েছে। এটা মোকাবিলা করতে হবে। আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আসছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন সব বক্তব্য প্রচার করা হবে, যেটা সম্পূর্ণ ভুয়া। এটাও বিরাট চ্যালেঞ্জ। এই প্রযুক্তি মোকাবিলায়, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এটা শিখতে হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য এখনই প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সালমান রহমান বলেন, ‘পাঁচ বছর অনেক সময় মনে হলেও দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে। তাই এখন থেকেই আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
‘এদেশের সবাই আওয়ামী লীগ করে না। কেউ কেউ বিএনপি করে। আবার অনেকে নিরপেক্ষ আছে। আমাদের কাজ নিরপেক্ষদের মনজয় করা। এটা তখনই সম্ভব, যখন আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি বলেন, দেশের মানুষ যখন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে, তখনও বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরা গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণের শত্রু। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের বহিষ্কার করছে দলটি। এমনকি যারা জিতেছেন তাদেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে। এরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তবে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটানো যায় না। ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচন করেই আসতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘১৫ বছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম আর আজ কোথায় আছি। এই সবকিছুর কারিগর শেখ হাসিনা। সেদিন আর খুব বেশি দূরে নেই, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আর কোনো হতদরিদ্র মানুষ থাকবে না। বছর পাঁচেকের মধ্যেই হতদরিদ্র মানুষ দেখতে হলে এদেশের তরুণ সমাজকে জাদুঘরে যেতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এমপি, মির্জা আজম এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা-১৯ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. এনামুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ঝিলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আলম সমর, সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাকুর রহমান সাকো, দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ।