বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে আরসার আস্তানা, আটক ২

  • প্রতিনিধি, কক্সবাজার   
  • ১৫ মে, ২০২৪ ১৭:২৩

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে র‍্যাবের অভিযানকালে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি রকেট সেল, তিনটি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, একটি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড পিস্তলের অ্যামুনিশন, একটি এলজি এবং তিনটি ১২ বোর কার্তুজ।

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানার সন্ধান মিলেছে। সেখানে টানা ৬ ঘণ্টার অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব।

বুধবার ভোর ৫টা থেকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ের গহীনে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানান র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম।

অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি রকেট সেল, তিনটি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, একটি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড পিস্তলের অ্যামুনিশন, একটি এলজি এবং তিনটি ১২ বোর কার্তুজ।

র‍্যাবের অভিযানে আরসার আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের অংশবিশেষ। ছবি: নিউজবাংলা

অভিযানে আটক করা হয়েছে আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দুল আবেরার ছেলে শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ও তার অন্যতম সহযোগী ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মোহাম্মদ নুরের ছেলে রিয়াজ।

অভিযান শেষে বুধবার দুপুর ১২ টায় ঘটনাস্থলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি শুরু করে। এর সূত্র ধরেই জানা যায়, মাস্টার সেলিম বর্তমানে বাংলাদেশের আরসার প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার নেতৃত্বে পুনরায় হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অস্ত্র-গোলাবারুদ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এ সময় আরসার দুই সন্ত্রাসীকে আটকের পাশাপাশি তাদের আস্তানা থেকে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেল উদ্ধার করা হয়েছে।

অভিযানে আটক আরসার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সলিম ও তার সহযোগী রিয়াজ। ছবি: নিউজবাংলা

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম জানান, শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সে ১৫ নম্বর ক্যাম্পে বসবাস শুরু করে। তার আগে মিয়ানমারে থাকাকালীন সে সেখানকার আরসা জোন কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল।

এছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে দুমাস দায়িত্ব পালন করে এই সলিম।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালে আসার পর মৌলভী আকিজের মাধ্যমে আরসায় পুনরায় যোগদান করে সলিম। আরসার হয়ে আধিপত্য বিস্তার, কোন্দল, খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে এই সন্তাসী।

অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের ওপর সন্ত্রাসী সলিমের পারদর্শিতা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ অন্য বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। আর রিয়াজ তার সহযোগী। এ ব্যাপারে মামলা করে আটক দুজনকে উখিয়া থানায় সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

অভিযানে উদ্ধার উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি ও রকেট সেল নিষ্ক্রিয় করে সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল। ছবি: নিউজবাংলা

আরাফাত ইসলাম জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক ২০২৩ সালে ৬৪ জন এবং ২০২৪ সালের এ পর্যন্ত ১৬ জন হত্যার শিকার হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম নির্মূলে র‌্যাব শুরু থেকেই বিশেষ গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারি চালু রেখেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে র‍্যাব। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড গুলির খোসা, চারটি আইডি ও ৩৫টি ককটেল। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বুধবার এই অভিযানের পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল। দলটি অভিযানে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি এবং রকেট সেল নিষ্ক্রিয় করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর