টানা দাবদাহে জনজীবনে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের পর কিছুটা স্বস্তি এলেও এখনও নানা রোগে ভুগছে মানুষ। গত ১ মাস ধরে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন উপজেলায় বেড়েছ মানুষের অসুস্থতা।
শিশুদের সর্দি কাশি, ডায়রিয়া, আমশায়সহ পেটের পীড়া দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে চিকিৎসা নিতে দেখা যাচ্ছে শিশুদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরির্বতনজনিত কারণে শিশুদের এসব রোগ বালাই বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা গুরুতরদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে।
তারা বলছেন, গরম-ঠান্ডায় হঠাৎ করেই বাড়তে থাকে বিভিন্ন রোগ বালাই। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষরা এই বৈরী আবহাওয়ায় আক্রান্ত হতে থাকে বিভিন্ন রোগে।
চিকিৎসকরা বলছেন, গুমোট আবহাওয়ায় বাড়ি থেকে বের হওয়াই ভালো। শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে মায়েদের বিভিন্ন পরার্মশ মেনে চলতে হবে। পঞ্চগড় জেলা শহরের ইসলামবাগ এলাকার বাসিন্দা গৃহীনি রাবেয়া খাতুন জানান, তার আড়াই বছরের শিশু গত ২ সপ্তাহ ধরে সর্দি-কাশিতে ভুগছে, স্থানীয় চিকিৎসকের চিকিৎসা নেয়ার পরেও সুস্থ হচ্ছে না।
বোদা উপজেলার পাঁচপীর এলাকার আতাউর রহমান জানান, গত ৪ দিন ধরে তার ১ বছরের শিশু কোনো খাবার খাচ্ছে না, সারাক্ষণ শুধুই কান্নাকাটি করছে, ঠাকুরগাঁও গিয়ে শিশু ডাক্তারকে দেখিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গরম-ঠান্ডায় শিশুরা বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে, গড়ে ভর্তি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ জন শিশু। জায়গার অভাবে অধিকাংশ রোগীকে থাকতে হচ্ছে মেঝেতে। পাশাপাশি বয়স্ক মানুষরা আক্রান্ত হচ্ছে জ্বরে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক শিশুকে হাসপাতালের বর্হিবিভাগে দেখতে হচ্ছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখে শিশুদের খাবার পরিবেশনসহ সহনীয় তাপমাত্রায় তাদের সুরক্ষিত রাখার পরার্মশ দেয়া হচ্ছে।
ঠাকুরগাও আধুনিক সদর হাসপাতালের সাবেক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহানেওয়াজ বলেন, গত ২ সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা আসছে। যারা গুরুতর আক্রান্ত হচ্ছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। আবহাওয়ার তারতম্য সহ শিশুদের বাসি এবং ঠান্ডা খাবার খাওয়ানোর কারণে এসব রোগ বালাই দেখা দিয়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রাজিউর রহমান বলেন, মা ও শিশুদের চিকিৎসা নিবিড়ভাবে প্রদান করার জন্যে হাসপাতালে বিশেষ ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। স্যালাইনসহ সরকারিভাবে শিশুদের সব চিকিৎসা সুবিধা পর্যাপ্ত রয়েছে।