বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দোকানে দোকানে ‘গ্যাস বোমা’

  • খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি   
  • ১২ মে, ২০২৪ ২১:১৮

এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। মানহীনভাবে রিফিল করা এসব সিলিন্ডারে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। অবৈধভাবে রিফিল করা এসব সিলিন্ডার যেন একেকটি ‘গ্যাস বোমা’।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী-বেগমগঞ্জের দোকানে দোকানে নামিদামি কোম্পানির সিলিন্ডারে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ গ্যাস। বিভিন্ন কোম্পানির বোতলে অনুমোদনহীন কারখানা থেকে রিফিল করা হচ্ছে এ গ্যাস। পরে সেসব বোতল জেলার বিভিন্ন উপজেলার দোকানে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। মানহীনভাবে রিফিল করা এসব সিলিন্ডারে যে কোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। অবৈধভাবে রিফিল করা এসব সিলিন্ডার যেন একেকটি ‘গ্যাস বোমা’।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর ভূইয়া বাড়ির এক ভাড়া বাসায় তৈরি করা হয়েছে একটি কারখানা। যেটির তত্বাবধায়নে রয়েছেন মো. ফয়েজ নামের এক যুবক। যিনি ফেনী এবং চট্টগ্রাম জেলা থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস পূর্ণ সিলিন্ডার ভাঙ্গারি লোহার দোকান থেকে কিনে আনেন। পরে সেই মেয়াদোত্তীর্ণ বোতল থেকে গ্যাস বিভিন্ন দোকানের খালি সিলিন্ডারে ভরে বাজারে বিক্রি করেন।

বছরখানেক আগে এই ফয়েজ চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনা এলাকায় মুরগি ব্যবসার আড়ালে পরিচালনা করতেন গ্যাস সিলিন্ডার রিফিলের ব্যবসা। পরে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অভিযানে সেই কারখানা বন্ধ করা হয়। চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনা থেকে এখন সেই ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা খুলেছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ নরোত্তমপুর গ্রামের ভূইয়া বাড়িতে। রাত হলেই শুরু হয় ঝুঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস ভরার কাজ।

অনুমোদন বিহীন এই কারখানাটি যেন একটি মৃত্যুকূপ। যেখানে নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস পূর্ণ সিলিন্ডার থেকে বিভিন্ন বোতলে ভরা হচ্ছে এলপিজি গ্যাস। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী। পাশেই রয়েছে বিভিন্ন পরিবারের বসতঘর।

এক গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী জানান, এখানে গ্যাস রিফিল হয়ে চলে যায় সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইসলামগঞ্জ বাজার, দিঘিরজান বাজার, সোনাইমুড়ী বাজার, আমিশাপাড়া বাজার, নদনা বাজার, নতুন বাজার, চৌমুহনির চৌরাস্তা, চন্দ্রগঞ্জ বাজার ও কেন্দ্রবাগ বাজারসহ ১৫-২০টি বাজারে।

বাসাবাড়ি, হোটেল, রেস্তোরা, পরিবহন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রয়েছে গ্যাসের ব্যবহার। এই ধরনের নিম্ন মানের গ্যাস অত্যান্ত বিপদজনক। এর আগেও চৌমুহনী বাজারে বড় মসজিদ মার্কেট ও হকার্স মার্কেট, সোনাইমুড়ীর আমকি বাজারে ও উপজেলার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ঘটেছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ধরনের গ্যাস বিক্রিতে লাভ বেশি। তাই নামিদামি কোম্পানি থেকে গ্যাস না কিনে এই সিন্ডিকেটের কাছ থেকে বোতল রিফিল করে নেন ব্যবসায়ীরা। যমুনা, বসুন্ধরা, টোটাল, পেট্রিগ্যাসের বোতল রিফিল করা হয় বলে জানা গেছে।

নরোত্তমপুর এলাকার ফজলুল হক জানান, ভূইয়া বাড়ির পাশের মসজিদের তিনি নিয়মিত নামাজ পড়েন। সন্ধ্যার পর ওই বাসার পাশ থেকে গ্যাসের গন্ধে নামাজে যেতে কষ্ট হয়। কয়েকবার ফয়েজকে এই বিষয়ে অভিযোগ করলেও কোনো সমাধান হয়নি।

তিনি বলেন, এই নিম্নমানের গ্যাস অন্য বোতলে ভরার সময় যেকোনো সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। এলাকাবাসী রয়েছে আতঙ্কে। স্থানীয় মাতবর ও প্রশাসনের লোকজন এসে এখান থেকে মাসোয়ারা নিয়ে থাকেন। তাই এলাকার লোকজন ভয়ে মুখ খোলে না।

সোনাইমুড়ীর উপজেলার যমুনা গ্যাসের ডিলার হাফিজুর রহমান জানান, এই ধরনের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন। অবৈধ গ্যাস রিফিল একটি অপরাধ ও আইনবহির্ভূত কাজ। বড় বড় কম্পানির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা করায় সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এর আগে বজরা এলাকায় যমুনা গ্যাসের বোতলে এমন অবৈধ চক্রের কারসাজি ধরা পড়ে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ বলেন, এই ধরনের অবৈধ গ্যাস রিফিল করা সম্পূর্ণ বেআইনি। অতি শিগগিরিই এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর