মাদারীপুরে পুলিশে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নেয়ার ঘটনায় বাহিনীটির দুই সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে।
গত বছরের মার্চ মাসের এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল ঘুষ দিয়ে চাকরি পেতে আগ্রহী এক ব্যক্তি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের ক্লোজ করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম।
পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার ও শহীদুল ইসলাম মাদারীপুর সদর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে টাকা লেনদেন সংক্রান্ত একটি ভিডিও এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। এতে দেখা যায়, তানজিলা আক্তার একটি দোকানে অবস্থান করে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল নিচ্ছেন।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত। ২০২৩ সালের ১ মার্চ ওই দোকানে টাকা লেনদেন হয়।
অভিযোগকারী রতন দাস মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর এলাকার রবি দাসের ছেলে।
তিনি জানান, একটি দোকানে কাজ করতেন তিনি। সেখানেই পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে পুলিশে নিয়োগের সময় তানজিলা রতনকে পুলিশে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেন। বিশ্বাস অর্জনের জন্য সে সময় তিনি রতনকে কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও দেন।
তানজিলা আক্তারের নামে কমিউনিটি ব্যাংকের ওই চেকে তার স্বাক্ষর ও তারিখ রয়েছে দেখা যায়।
এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর ফলাফল দিলেও চাকরি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন রতন। উপায় না পেয়ে পরে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেন ঘুষ প্রদানকারী এ যুবক।
এ বিষয়ে রতনের ভাষ্য, ‘পুলিশে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছেন তানজিলা আক্তার নামের এক পুলিশ, কিন্তু তিনি চাকরি দিতে পারেননি। আমার টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ব্যবসা শুরু করেছেন। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিভিন্ন রকমের টালবাহানা করছেন। এই ঘুষ নেয়ার সঙ্গে শহীদুল নামের এক পুলিশও জড়িত।’
অভিযোগকারী রতন দাসের বাবা রবি দাস বলেন, ‘আমি ধারদেনা করে ছেলের চাকরির জন্য তানজিলার কাছে টাকা দিয়েছিলাম। সে চাকরি দিতে পারেনি। এখনও টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তাই এসপি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কথা বলতে চাননি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার। শুধু বলেন, ‘যা বলার এসপি স্যারকেই বলেছি।’
অপর অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম নিজের দায় অস্বীকার করেন। টাকা গ্রহণ করেননি বলে দাবি তার।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘এই ঘটনায় একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’