বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট অসিম জাওয়াদ

  • প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ   
  • ১০ মে, ২০২৪ ১৭:৪৬

বেলা পৌনে ১২টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার-২১৯ এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হয়।

বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান ও সহকর্মীসহ হাজারো মানুষের চোখের জলে শেষ বিদায় নিয়ে চির শায়িত হলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাত।

শুক্রবার বাদ জুমা বেলা ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ কোর্ট মসজিদের ইমাম মুফতি রফিকুল ইসলাম মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে তৃতীয় জানাযার নামাজ পড়ান।

পরে দাফনের জন্য মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে শহরের সেওতা কবরস্থানে নেয়া হয় এবং সেখানে অসিম জাওয়াদ রিফাতের নানার কবরের ওপরই তার কবর দেয়া হয়।

এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার-২১৯ এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ মানিকগঞ্জে আনা হয়।

অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহে বহনের সময় বহনকারী হেলিকপ্টারের সাথে অসিম জাওয়াদ রিফাতের বাবা ডাক্তার আমান উল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার, ৬বছরের শিশু কন্যা আয়জা আক্তার ও ১ বছরের শিশুপুত্র আয়মান ইসলামসহ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাথে ছিলেন।

মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টারের শব্দ পেয়ে মাঠে ছুটে আসেন মা নিলুফার খানম। হেলিকপ্টারের দিকে তাকিয়ে ছেলের জন্য আর্তচিৎকার করতে থাকেন। হেলিকপ্টার মাঠে অবতরণের পর পরই ছেলের মুখ দেখার জন্য পাগলের মতো ছুটে যান মা নিলুফার খানম।

পরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতায় পরিবেশ শান্ত করে ছেলের কাছে নিয়ে যান মা নিলুফার খানমকে। ছেলের মরদেহ কফিন দেখেই হেলিকপ্টারের ভিতরে কফিন জড়িয়ে ধরে ছেলের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। পরে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে হেলিকপ্টারের বাইরে আনা হয়।

হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ আসার আগেই ছেলেকে শেষ বারের মতো দেখতে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন মা নিলুফার খানম। এ ছাড়া অসিম জাওয়াদ রিফাতকে শেষ বারের মতো দেখতে ভিড় করেন আত্মীয় স্বজন ও সাধারণ মানুষ।

অসিম জাওয়াদ রিফাতকে সম্মান জানাতে এবং অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহের অপেক্ষায় ছিলেন বিমান বাহিনীর সদস্য,পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।

নিহতের বাবা আমান উল্লাহ বলেন, ছোট বেলা থেকেই ছেলেকে ঘিরে আমাদের সংসার সাজিয়েছি। আমার ছেলে অনেক মেধাবী ছিল। স্কুলে থেকে ভার্সিটিতে সব সময় ফাস্ট বয় ছিল। আমি আর ওর মা ওকে (ছেলে) অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে বলছিলাম। কিন্তু ছেলে তার শখে পূরণের জন্যই বিমান বাহিনীতে যোগদান করল।

তিনি বলেন, আমি এবং আমার স্ত্রী সব সময় অসিম জাওয়াদ রিফাতের চাওয়া-পাওয়াকে প্রধান্য দিয়ে আসছি। আমাদের পরিবারের একমাত্র সন্তান হওয়ায় আত্মীয় স্বজনদের কাছেও অসিম জাওয়াদ রিফাত খুব আদারের ছিল। আমাদের ছেলে তো চলে গেল, আমরা কাকে ঘিরে বেঁচে থাকব। কে আমাদের নিয়মিত খোঁজ খবর নেবে।

আমান উল্লাহ বলেন, আমি আর কোনদিন বাবা ডাক শুনতে পারব না, আমিও আর কোনদিন বাবা বলে ডাকতে পারব না। আমার ছেলে একা মারা যায় নাই,আমাদের পরিবারটাকে মেরে ফেলে।

পরে কান্নাবিজড়িত কন্ঠে জানাজায় উপস্থিত সবার কাছে ছেলের আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া কামনা করেন এবং ছেলের রেখে যাওয়া স্ত্রী মেয়ে ও শিশু ছেলের জন্যও সকলের কাছে দোয়া চান।

বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার আন্নু জানান, শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে আনা হয়। এরপর তাকে রাস্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার দেওয়া হয় এবং মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে তার মরদেহ রাখা হয়।

তিনি জানান, পরে পরিবারের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কিছুক্ষণের জন্য ফ্রিজিং গাড়ি থেকেই শেষ বারের মতো জনসাধারণের জন্য অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর