বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘তুই কেন এত ভালোবাসলিরে বাবা’

  • প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ   
  • ৯ মে, ২০২৪ ২১:৪১

রিফাতের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল বলেন, ‘যখন আমাদের খবর দেয়া হয়, তখনও সে হাসপাতালে জীবিত ছিল, কিন্তু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর খালা বেহুঁশ হয়ে যান। তার পর থেকেই খালা বারবার বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছেন।’

‘আমার সন্তান কেন আমাকে এত ভালোবাসল? অনেকের সন্তান আছে, মা-বাবাকে তেমন ভালোবাসে না। আমাকে এত ভালো না বাসলে, আমি ভুলে যেতে পারতাম। কেন এত ভালোবাসলিরে বাবা? তুই কেন এত ভালোবাসলি?’

বৃহস্পতিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরের পৌর ভূমি অফিস লেনের গোল্ডেন ভিলার ৬ তলার বাসায় একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এভাবেই বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাতের মা নিলুফার খানম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর শোকে কাতর নিলুফার খানমের অবস্থাও সংকটাপন্ন। পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে সান্ত্বনা দিতে চেষ্টা করছেন।

রিফাতের খালাতো ভাই মশিউর রহমান শিমুল বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার পর পাইলট রিফাতের ব্যাচমেট ফোন করে খালাকে (অসিম জাওয়াদ রিফাতের মা) যেতে বলেছিলেন। খবর পেয়ে আমরা যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিটও কেটেছিলাম। যখন আমাদের খবর দেয়া হয়, তখনও সে হাসপাতালে জীবিত ছিল, কিন্তু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর খালা বেহুঁশ হয়ে যান। তার পর থেকেই খালা বারবার বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছেন।’

তিনি জানান, ঈদে সবশেষ ৪ দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন রিফাত। ছুটি পেলেই তিনি মায়ের কাছে ছুটে আসতেন। তাছাড়া প্রতিদিন বেশ কয়েকবার ফোন করে মায়ের খোঁজখবর নিতেন তিনি।

তিনি জানান, স্কুল জীবন থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন অসিম জাওয়াদ রিফাত। চাকরি জীবনের প্রত্যেক ট্রেনিংয়ে তিনি প্রথম হতেন এবং তার ব্যাচের মধ্যেও তিনি ‘ফার্স্ট বয়’ ছিলেন। দেশের বাইরে তিনি রাশিয়া, চীন ও ভারতে প্রশিক্ষণের সময়ও প্রথম হন।

রিফাতের মামা সুরুজ খান জানান, বিমান বাহিনীর চাকরির সুবাদে স্ত্রী অন্তরা আক্তারসহ ৬ বছরের মেয়ে ও ১ বছরের ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামে থাকতেন রিফাত। তার বাবা ডাক্তার আমানউল্লাহ ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারি করতেন এবং ঢাকাতেই থাকেন। মানিকগঞ্জ শহরের পৌর ভূমি অফিস লেনের বাসায় শুধু তার মা একাই থাকতেন।

তিনি বলেন, ‘রিফাত মানিকগঞ্জে তেমন আসতে পারত না। তবে ওর মায়ের সঙ্গে সবসময় ফোনে যোগাযোগ রাখত। পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে ওর মা আবেগআপ্লুত হয়ে বারবার বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছে। তার এমন মৃত্যুর আমরা কেউই মেনে নিতে পারছি না।’

সুরুজ খান জানান, বিমান বাহিনীর অফিশিয়াল প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার হেলিকপ্টারে করে রিফাতের মরদেহ মানিকগঞ্জে আসবে। পরে শহরের সেওতা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্কোয়াড্রন লিডার পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাত মারা যান।

এ বিভাগের আরো খবর