‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এর চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে চারদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। মানবপাচার আইনে করা মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার রোববার শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আশ্রমের মৃত ব্যক্তিদের জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে রোববার মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
এদিকে তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাতদিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
মিল্টন সমাদ্দারকে বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় বৃহস্পতিবার (২ মে) মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার সাতদিন রিমান্ডের আবেদন করেন ডিবির এসআই কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মানবপাচারের অভিযাগে বুধবার (১ মে) রাতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি শেরে বাংলানগর থানার ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের সামনে দুই বছরের এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনি থানায় ফোন করেন। কিন্তু থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এ ফোন করলে মিল্টন সমাদ্দার ওই শিশুকে নিয়ে যান। তখন বাদী নিজেও তাদের সঙ্গে যান।
মিল্টন সমাদ্দার তাকে (বাদী) অজ্ঞাতনামা শিশুর অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে’ ভর্তি করা হয়। এরপর মিল্টন সমাদ্দার জানান, আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক নেয়া যাবে।
এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর হঠাৎ একদিন ফোন করে মিল্টন সমাদ্দার বাদীকে গালিগালাজ করেন এবং বলেন- তিনি যেন তার প্রতিষ্ঠানে আর না যান এবং শিশুটির খোঁজ-খবর না নেন।
এরপর আরও বেশ কয়েকজন ফোন করে বাদীকে হুমকি দেন ও ভয়ভীতি দেখান। প্রাণভয়ে তিনি আর সেখানে যাননি। সম্প্রতি একটি খবর নজরে আসার পর ২৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিশুটিকে তিনি পাননি। শিশুটি কোথায় আছে, সে ব্যাপারেও সদুত্তর মেলেনি।
বাদীর অভিযোগ, শিশুটিকে পাচার করা হয়েছে।