বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভয়ঙ্কর প্রতারক চক্রের ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ফাঁদ, অবশেষে ধরা

  • প্রতিনিধি, কুমিল্লা   
  • ৪ মে, ২০২৪ ২০:২৩

প্রতারক চক্রের হোতা তাসনুভা আক্তার টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে গোপন ক্যামেরায় তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে শুরু করে ব্ল্যাকমেইল। লোকলজ্জার ভয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিও ওদের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হন। চক্রটি এভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৩৫ লাখ টাকা।

প্রবাস থেকে দেশে ফেরা কিংবা আশপাশের বিত্তশালীদের ওরা টার্গেট করে। এর অংশ হিসেবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ফোন নম্বর সংগ্রহ করে টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে। তারপর গোপন ক্যামেরায় শিকারি নারীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে।

শিকারকে ফাঁদে ফেলার প্রথম পর্ব শেষ। এবার এই আপত্তিকর ভিডিও দিয়ে শুরু করে ব্ল্যাকমেইল। ধাপে ধাপে হাতিয়ে নিতে থাকে অর্থ। লোকলজ্জা আর মানসম্মানের কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ওদের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হন। এভাবে ওরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কমপক্ষে ৩৫ লাখ টাকা।

এমন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে মাঠে নামে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। আটক করা হয় এই প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ভয়ংকর সব তথ্য।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোঃ আবদুল মান্নান শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেফতার সাতজন হলেন- ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয় দেয়া সৈয়দ অয়াত উল্যাহ ও ইমরান হোসেন, সাংবাদিক পরিচয় দেয়া মো. মোজাম্মেল হক, চাঁদা আদায়কারী মো. সাখাওয়াত হোসেন, গোপনে ভিডিও ধারণকারী আব্দুর রহিম, ফাঁদে ফেলার বাসার মালিক মোহাম্মদ কোভিদ হোসেন ও পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তাসনুভা আক্তার।

তানসুভার কাজ ছিলো টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলা। তারপর ঘনিষ্ঠ হওয়ার কথা বলে একটা কক্ষে টার্গেট ব্যক্তিকে নিয়ে আসা। সেখানে আগে থেকেই ক্যামেরা রেডি রাখা হতো। ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া সৈয়দ অয়াত উল্যাহ মোবাইল ফোনে ধার্যকৃত চাঁদার জন্য হুমকি-ধমকি দিতো। না হয় গ্রেপ্তারের ভয় দেখাতো।

এই দলের আরেক সদস্য সাংবাদিক পরিচয় দেয়া মো. মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করার ভয় দেখাত। মানসম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে প্রতারক চক্রের হাতে টাকা তুলে দিতো।

প্রতারক চক্রটি এভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এই সাতজনকে আটক করে। এ সময় চাঁদা আদায়ে ব্যবহৃত ভুক্তভোগীর স্বাক্ষরিত সাতটি অলিখিত স্ট্যাম্প ও সাতটি খালি ব্যাংক চেক জব্দ করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, বেশকিছু কেস স্টাডির মধ্যে কুমিল্লার লাকসামের এক ভুক্তভোগীকে মোবাইল ফোনে কল করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাসনুভা আক্তার। পরিকল্পনা করে তাকে সদর উপজেলার বালুতোপা এলাকার একটি বাসায় নিয়ে শারীরিক সম্পর্কের গোপন ভিডিও করে। এ সময় কৌশলে ঘটনাস্থলেই ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখিয়ে শুরু হয় ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চাঁদা আদায়।

একপর্যায়ে প্রতারণার ভিডিও ভুক্তভোগীর ছেলের মোবাইলে পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে চক্রটি। সম্মানহানির কথা চিন্তা করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রতারক চক্রকে ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়া হয়। পরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অভিযোগ দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে চক্রের সাত সদস্যকে আটক করে।

এ বিভাগের আরো খবর