গাজীপুরের কালিয়াকৈরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর স্বজন (ভাতিজা) ও চেয়ারম্যান প্রার্থী (কাপ পিরিচ মার্কা) মুরাদ কবীর। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ণ যাতে না হয় ও দলের প্রতি আনুগত্যকে দেখিয়েছেনে তিনি।
শুক্রবার সকালে উপজেলার সফিপুর এলাকায় তার ব্যক্তিগত অফিসে সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন মুরাদ কবীর। তবে প্রতীক বরাদ্ধের পর তার এমন ঘোষণায় কর্মী-সমর্থকদের মাঝে হতাশা দেখা গেছে।
আগামী ২১ মে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্ধ দেয় নির্বাচন অফিস। সে হিসেবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের প্রার্থী ছিলেন তিনজন।
তারা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ কবীর (কাপ পিরিচ প্রতীক); তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হকের ভাতিজা। অপর দুই প্রার্থী হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার (আনারস প্রতীক) এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ (মোটরসাইকেল প্রতীক)।
মুরাদ কবীরের কর্মী-সমর্থকরা জানিয়েছেন, প্রতীক বরাদ্ধের পর তারা মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পোস্টার ছড়িয়ে দেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় নিজের পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক সংবলিত পোস্টার টাঙিয়ে দেন, শুক্রবার সকালে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলার সফিপুর এলাকায় তার ব্যক্তিগত অফিসে সংবাদ সম্মেলনের করে এ সিদ্ধান্ত জানান। মুহূর্তের মধ্যে তার এমন ঘোষণায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। আর প্রতীক বরাদ্ধের পর তার এমন সিদ্ধান্তে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তবে এখন তিনি কোন প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা।
সংবাদ সম্মেলনে মুরাদ কবীর বলেন, ‘এ উপজেলা নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে এ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব। কারণ আমি দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী পরিবারের সঙ্গে জড়িত। ১৯৮১ সালে ছাত্রলীগ করেছি। আজকে পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত।
‘এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত এসেছে। সেটা হচ্ছে, কোনো এমপি বা মন্ত্রীর পরিবারের কেউ বা আত্নীয়-স্বজনরা এ নির্বাচনে অংশনগ্রহণ করতে পারবে না। এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত, এ সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য। যদিও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি নির্বাচন করতে পারি। কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব।’
এখন কোন প্রার্থীকে সমর্থন দিবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য যে দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন, তারা দুজনই আওয়ামী লীগের। সেখানে আলাদাভাবে সমর্থন দেয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।’