বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেহেরপুরের বাজারে রসালো লিচু, দাম কিছুটা বেশি

  • প্রতিনিধি, মেহেরপুর   
  • ২ মে, ২০২৪ ১৯:৩৩

প্রাকৃতিক কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় কৃষিনির্ভর মেহেরপুরে লিচু একটু আগেভাগেই পেকে যায়। একই সঙ্গে লিচু স্থানীয় বাজারে আগেভাগে আসায় দামও ভালো পাওয়া যায়। ফলে প্রতি বছরই ব্যাপকহারে লিচু চাষে ঝুঁকছেন এ জেলার চাষিরা।

টানা তাপপ্রবাহে পুড়ছে মেহেরপুরের জনপদ। এর মধ্যেই প্রাকৃতিক সব বাধা পেরিয়ে রসালো ফল লিচু বাজারে বিক্রি হওয়া শুরু হয়েছে।

প্রাকৃতিক কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় কৃষিনির্ভর মেহেরপুরে লিচু একটু আগেভাগেই পেকে যায়। একই সঙ্গে লিচু স্থানীয় বাজারে আগেভাগে আসায় দামও ভালো পাওয়া যায়। ফলে প্রতি বছরই ব্যাপকহারে লিচু চাষে ঝুঁকছেন এ জেলার চাষিরা।

ক্রেতারা বলছেন, দামটা একটু বেশি হলেও মৌসুমের নতুন ফল হিসেবে ঠিক আছে। তবে এবারের লিচু আকারে বেশ ছোট, আবার স্বাদেও মিষ্টতা একটু কম। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর মৌসুমের শুরু থেকেই লিচু বাগানে কম পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দাম একটু বেশি। আবার আজকাল বৃষ্টি না হলে দাম আরও বাড়বে।

জেলার গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারের লিচু ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বৃহস্পতিবারই প্রথম বাজারে লিচু কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ বছর প্রাকৃতিক কারণেই শুরুতে গাছে লিচুর মুকুল কম এসেছিল। আবার যখন লিচু বেড়ে ওঠার কথা, ঠিক সেই সময়টিতে প্রচণ্ড দাবদাহে গাছ থেকে শুকিয়ে মাটিতে ঝরে পড়েছে লিচু।

আবার তুলনামূলক ভাবে আকারেও বেড়েছে কম। যার ফলে উৎপাদন হয়েছে কম। তাই বাজারে শুরুতেই দামটা একটু বেশি। প্রতি পিচ লিচু প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ টাকা করে। তবে দাম যা-ই হোক মৌসুমের নতুন ফল হিসেবে এটির স্বাদ নিতে ভুল করছেন না ক্রেতারা।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ৮০০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। শুরুতে ৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। এ সব বাগানে ,আটি লিচু, বোম্বাই, চিলি বোম্বাই, আতা বোম্বাই ও চায়না-থ্রি জাতের লিচু উৎপাদন হয়ে থাকে।

লিচু কিনতে আসা শাহানাজ বেগম বলেন, প্রতি পিচ লিচু আমার চার টাকা করে পড়ল। তাতে কী ? মৌসুমের প্রথম ফল। আমার বাচ্চারা লিচু ফলটি খুব পছন্দ করে।

আরেক লিচু ক্রেতা গৃহিনী সুইটি আক্তার বলেন, আমার বাসায় তিনটি ছেলে মেয়ে আছে। ওরা লিচু খুব পছন্দ করে। লিচুতো আর বারো মাস পাওয়া যায় না। বাজার করতে এসে লিচু বিক্রি করতে দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। দাম যেমনটিই হোক এক শ পিচ লিচু কিনে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।

লিচু ফল বিক্রেতা রকিবুল ইসলাম বলেন, আমি সেই মুজিব নগর এলাকার এক বাগান থেকে দুই ঝাইল লিচু নিয়ে বাজারে এসেছি। এসে এক ঘণ্টার মধ্যে সব লিচু বিক্রি শেষ। এতো চাহিদা হবে ভাবতে পারিনি। আমি ভাবলাম এই লিচু গত বছর বিক্রি করেছি ২ টাকা, আর এবার বিক্রি করছি ৪ টাকা পিচ হিসেবে,আবার আকারে গত বছরের তুলনায় ছোট। তারপরও মানুষ খুব কিনছে।

আরেক লিচু বিক্রেতা সুজন আলী বলেন, আমি চার গাছ কুড়িয়ে লিচুগুলো পেয়েছি। এবার চারটি গাছের মধ্যে দুটি গাছে অল্প করে লিচু ধরেছে। তাই গাছ মালিক দাম একটু বেশিই ধরেছে। যে লিচু এক টাকা করে পিচ হওয়ার কথা তার দামই এখন আড়াই টাকা করে কিনতে হচ্ছে। আর আমরা বাজারে চার টাকা করে বিক্রি করছি। তবে এবছর লিচুর যে অবস্থা পানি না হলে দাম আরও বেড়ে যাবে। তা ছাড়া আমাদের জেলার লিচু শেষ হওয়ার পরে, অন্য জেলার লিচু পাওয়া যাবে।

লিচু চাষি শওকত আলী বলেন, আমার বাগানে শতাধিক লিচু গাছ থাকলেও ফল এসেছে অর্ধেক গাছে। আবার গত বছরের তুলনায় সেই গাছ গুলোতে লিচু দাঁড়িয়েছে কম। আর রোদ্রের তাপে গাছ থেকে লিচু একাই ঝরে পড়ছে। গাছে গোড়াই পানি দিয়েও তেমন একটা ফল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার যেগুলো গাছে আছে, তা আবার আকারে ছোট। যার কারণেভ এবারে বাগানে যা লিচু পাওয়া যাবে তা তিন ভাগের এক ভাগ।

জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সামসুল আলম বলেন, ভৌগোলিক কারণেই মেহেরপুর জেলার লিচু আগেভাগেই বেড়ে ওঠে এবং পেকে যায়। বাজারে অন্য জেলার চেয়ে আগে ওঠায় চাষিরা দামও বেশ ভালো পায়। এ বছর দাবদাহের কারণে লিচুর উৎপাদন কম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর