বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তাপপ্রবাহ: পঞ্চগড়ে পানির অভাবে মরছে চা গাছ

আজিজনগর এলাকার চা চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনাবৃষ্টির জন্য এক একর জমি থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার কেজি কাঁচা চা পাতা পাওয়া যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা কেনে মাত্র ১০ টাকা দরে। এক একর জমি থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা পাই। সেচ খরচ, সার, কীটনাশক, মজুরিসহ এক একর জমিতে খরচ পড়ে ৪০ হাজার টাকা।’

পঞ্চগড়ে গত সাত মাস ধরে নেই ভারি বর্ষণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্রীষ্মের খরতাপ। এ দুইয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চা বাগানে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চগড়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সাত মাসে ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি।

দেশের সর্ব উত্তরের জেলাটির চা চাষিরা বলছেন, অনাবৃষ্টির সঙ্গে তাপপ্রবাহ যুক্ত হওয়ায় সেচের পানি বেশি দিতে হচ্ছে বাগানগুলোতে, কিন্তু টাকার অভাবে অনেকে পর্যাপ্ত পানি দিতে পারছেন না। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আছেন তারা।

তাদের ভাষ্য, গত বছরের ভাদ্র মাসের পর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। এতে করে পানির স্তর নেমে গেছে অনেক নিচে। সেচের পানি জমিগুলো ধরে রাখতে পারছে না।

জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সর্দারপাড়া এলাকার চা চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘৪৫ দিন পরপর কাঁচা চা পাতা তুলি। এই ৪৫ দিনে আগে দুই থেকে তিনবার সেচ দিয়ে পানি দিতে হতো।

‘খরার কারণে এ বছর ৪৫ দিনে পানি দিতে হচ্ছে অন্তত ১০ থেকে ১২ বার। প্রতি একর চা বাগানে পানি দিতে খরচ হয় দুই হাজার টাকা।’

আজিজনগর এলাকার চা চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনাবৃষ্টির জন্য এক একর জমি থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার কেজি কাঁচা চা পাতা পাওয়া যায়। কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা কেনে মাত্র ১০ টাকা দরে। এক একর জমি থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা পাই।

‘সেচ খরচ, সার, কীটনাশক, মজুরিসহ এক একর জমিতে খরচ পড়ে ৪০ হাজার টাকা।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চা বাগানের যত্ন নিতে পারছি না। চা বাগান মরে যাচ্ছে। সরকার আমাদের দিকে না তাকালে মাঠে মারা যাব আমরা।’

গত কয়েক দিনে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে, তবে জেলায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে স্বীকৃত পঞ্চগড়ে চাষিদের অবস্থা নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমির হোসেনের সঙ্গে।

তিনি জানান, কাঁচা চা পাতার দাম কমে যাওয়ার কারণে অনেক চাষি চা বাগানে সেচ দিচ্ছেন না। তারা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও দিনাজপুরে নিবন্ধিত ৯টি ও অনিবন্ধিত ২১টি বড় চা-বাগান (২৫ একরের বেশি আয়তন) রয়েছে। এ ছাড়া দুই হাজার ৫৩টি নিবন্ধিত ও ছয় হাজার ৩০২টি অনিবন্ধিত ক্ষুদ্রায়তনের বাগান আছে।

এ অঞ্চলে বাড়ির আনাচ-কানাচে ক্ষুদ্র চাষিরা চা বাগান গড়ে তুলেছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চা হচ্ছে।

গত মৌসুমে পাঁচ জেলার সমতল ভূমিতে এক কোটি ৭৭ লাখ ৫৯ হাজার ২২৬ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।

চা চাষের জন্য ২৮ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবচেয়ে সহনীয়। পঞ্চগড়ের সাম্প্রতিক তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর