বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জবির দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ

  • প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:৪৩

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের কিশোরীলাল জুবিলি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় মহিউদ্দিন অনি ও হাসিবুল হাসান হৃদয়সহ ৬ জন ঐ ব্যবসায়ীর পথ রোধ করে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন অভিযুক্তরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে টাকা ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হাসান হৃদয়।

ওই দুজনের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে তার কাছ থেকে ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারী ফয়সাল ওরফে হেলাল সদরঘাটের বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৃত শাহ আলমের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের কিশোরীলাল জুবিলি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় মহিউদ্দিন অনি ও হাসিবুল হাসান হৃদয়সহ ৬ জন ঐ ব্যবসায়ীর পথ রোধ করে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন অভিযুক্তরা।

সে সময় প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পাশের এক রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করেন ভুক্তভোগী হেলাল। এরপর অনি ও হৃদয় ওই রেস্তোরাঁয় প্রবেশ করে তাকে পুনরায় চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

ভুক্তভোগী দাবি করা হেলালের অভিযোগ, আসামিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে তিনি আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

‘রাজ্য মহল কাচ্চি বিরিয়ানি হাউজ’ নামের ওই রেস্তোরাঁর ভেতরের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মহিউদ্দিন অনি ও হাসিবুল হাসান হৃদয় ওই ব্যক্তির সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলছেন। এক পর্যায়ে অনি উত্তেজিত হয়ে তাকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এরপর রেস্তোরাঁর কর্মীরা হেলালকে রক্ষা করতে গেলে তারা আরও মারমুখি হন।

রেস্তোরাঁর মালিক মিন্টু শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে একজন আশ্রয় চেয়ে আমার দোকানে প্রবেশ করেন। আমরা ঐ ব্যক্তিকে ভেতরে আসতে দিলে তার পিছু পিছু দৌড়ে আরও ২ জন দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হেলালকে (পরে নাম জানতে পারি) চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন একজন। আমরা বাধা দিতে গেলে দোকান-পাট ভাঙচুরের হুমকি দেন। পরে আমরা তাদের অনুরোধ করলে তারা চলে যায়।’

ফয়সাল ওরফে হেলাল ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয়ের নেতৃত্বে ৬ জন আমার ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে। শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় আমি পুরনো টাকা কালেকশন করতে সদরঘাট এলাকায় ছিলাম। ফোনে কথা বলতে বলতে আমি জুবিলি স্কুলের সামনে চলে যাই। সেখানে তারা বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদয় আমাকে দেখতে পায়।

তিনি বলেন, ‘হৃদয় অনিকে আমার কথা বললে অনি বলে- ওরে ধরে ওর পকেটে কত টাকা আছে দেখ। এরপর তারা এসেই আমাকে মারধর শুরু করেন।

‘তখন আমার সঙ্গে প্রায় দুই লাখ ছত্রিশ হাজারের মতো টাকা ছিল। মারধর করতে করতে তারা আমার পকেট থেকে ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। বাকি টাকা আমার মানিব্যাগে থাকায় তা আর নিতে পারে নাই। টাকা নেয়ার পর তারা আমার ওয়ান প্লাস মোবাইলকে আইফোন ভেবে কেড়ে নিতে চাইলে আমি তাদের থেকে ছুটকাড়া (ছাড়া) পেয়ে দৌঁড়ে পাশের এক হোটেলে যাই। হোটেলের মধ্যেও অনি আমারে মারধর করে। একপর্যায়ে হোটেলে থাকা লোকজন আমাকে রক্ষা করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) রাতেও বাইকে করে ৩ জন ব্যক্তি আমাকে ফলো করতে করতে ওয়ারী পর্যন্ত আসে। তারা আমাকে ইশারায় ডাকতে থাকে এবং বলে যে আমার সঙ্গে কথা আছে। আমি তাদেরকে দেখে রিকশা করে দ্রুত চলে যাওয়ায় চেষ্টা করি। আমি সাড়া না দেয়ায় আমাকে মারধরের হুমকি দেয় তারা।’

পুলিশের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর রাত সোয়া ১২টার দিকে আমি মামলা করার জন্য সূত্রাপুর থানায় যাই। পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। তারা আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি সমাধান করে ফেলতে বলে। আমি অস্বীকৃতি জানালে অনি পুলিশকে বলে আমাকে পাঁচ মিনিটের জন্য তার কাছে ছেড়ে দিতে।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জবি শাখা ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনি ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হেলাল নামের ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার অনেক আগে থেকেই পরিচয়। বিভিন্ন সময় দিন-রাতে তার সঙ্গে আমার দেখা হলে আমি তাকে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করি, কিন্তু সেদিন সে হুট করেই আমাকে চোর, সন্ত্রাস, ছিনতাইকারী বলে গালিগালাজ শুরু করে। তখন আমার সঙ্গে থাকা জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হাসান হৃদয় এবং আরেক ছোট ভাইকে বলি যে সে মদ্যপ কিনা দেখতে। তখন সে দৌঁড়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢোকে। পরে সেখানে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওখানে পুলিশ উপস্থিত ছিল।

‘পরের দিন থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে দুজন দুজনকে সরি বলে ঘটনার মীমাংসাও হয়েছিল। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কালি লাগানোর জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরেক অভিযুক্ত হাসিবুল হাসান হৃদয়কে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমিও বিষয়টি শুনেছি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ছাত্রলীগ কখনোই প্রশ্রয় দেবে না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সূত্রাপুর থানার ওসি মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে আমাদের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি। আমরা এ বিষয়ে অবগত নই। সংশ্লিষ্ট যারা দেখেছে তারা বলতে পারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর