প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পাহাড়ি ঢল থেকে ফসল রক্ষার জন্য শেরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকাগুলোতে কৃষকরা এবার আগাম বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এরই মধ্যে সেই ধান কাটা শুরু হয়েছে।
কৃষি শ্রমিক সংকট দূর করতে যান্ত্রিক উপায়ে ধান কাটার ওপর জোর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। পাহাড়ি এলাকার ৮০ শতাংশ জমির ফসল এখনো কাঁচা ও আধাপাকা অবস্থায় থাকায় পাহাড়ি ঢল নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। এতে তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করেই সোনালি ফসল ঘরে তুলতে মাঠে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন তারা।
জেলা কৃষি বিভাগের হিসেব মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৯১ হাজার ৮৮৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। আর জেলায় ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭২ টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
পাহাড়ি কয়েকটি এলাকা ঘুরে গত দু-তিন দিন ধরে আগাম ধান কাটার দৃশ্য দেখা যায়।
তিনআনীর কৃষক হামিদুর রহমান বলেন, আমরা আগাম জাতের ধান লাগাইছি। কারণ আমাদের এদিকে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢল আসে। এ বছর এহনও পাহাড়ি ঢল না আসায় নিরাপদে ধান কাটতাছি।
জুলগাও এলাকার কৃষক সোহেল বলেন, ধান পাকা শুরু করছে আমরা কাটাও শুরু করছি। এক সাথে সবার ধান কাটা শুরু করলে কামলার দামও বাড়ে। এইজন্য আগাম আবাদ করছি।
রাংটিয়ার কৃষক আনার মিয়া বলেন, আমাদের ঝিনাইগাতী বন্যার এলাকা। আমরা আগেই ক্ষেত লাগাই। আগেই কাডি। এহন গরম বেশি পরছে এল্লা কষ্ট হইতাছে। কিন্তু ঝড় বৃষ্টি, ঢল আসায় নিরাপদে ধান কাটতাছি।
তবে ধান কাটা শুরু হলেও আগাম ধানের ফলন নিয়ে কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে।
জুলগাও এলাকার কৃষক রহমত বলেন, আগাম ধান লাগাইয়া ফলন কম পাইতাছি। আগাম ধানের ফলন একটু কম। ধানের দাম বাড়তি থাকলে আমাদের একটু লাভ হবো। তানা হইলে আগাম ধানে লোকসান হইবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, ঝিনাইগাতী উপজেলায় প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলের কারণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ বছর কৃষকরা আগাম ধান আবাদ করার কারণে খুব দ্রুত ধান ঘরে তুলতে পারছেন। শ্রমিক সংকট দূর করতে যান্ত্রিক হারভেস্টিং ম্যাশিনেরে সাহায্যে দ্রুত ধান কাটার জন্যও কৃষকদের বলা হচ্ছে। সারা দেশে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণের সুফল আমরা পাচ্ছি। একই সময়ে ধান পাকার কারণে সেই ধান মেশিনের সাহায্যে দ্রুত কাটা হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ দুই বাঁচবে কৃষকের।
তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারেন, এজন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাই কৃষকরাও আর ঘরে বসে নেই।