বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঞ্চল্যকর সুবর্ণা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, আটক ২

  • প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ   
  • ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:৫৬

আটজন যুবক ও কিশোর মিলে পালাক্রমে ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সুবর্ণাকে হত্যা করে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

সাত বছর আগে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর সুবর্ণা নামের ৮ বছর বয়সী এক শিশু হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আটজন যুবক ও কিশোর মিলে পালাক্রমে ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সুবর্ণাকে হত্যা করে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

ইতোমধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চৌহালী উপজেলার দত্তকান্দি গ্রামের ২০ বছর বয়সী মো. সাব্বির হোসেন এবং একই গ্রামের ২১ বছর বয়সী মো. শাকিব খান।

সাব্বির ও সাকিব দুজনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোমহর্ষক এ ঘটনার বিবরণ দেন পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ২৭ মার্চ সকালে চৌহালী উপজেলার মধ্য শিমুলিয়ার চর থেকে সুবর্ণার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সুবর্ণার বাবা মো. শুকুর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে বাদী আদালতে নারাজি আবেদন দেন। এরপর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

‘২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর পিবিআই এসআই আশিকুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৯ এপ্রিল ভিকটিমের ফুফাতো ভাই মো. সাব্বির হোসেনকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যে ওই দিনই দত্তকান্দি শোলে বাজার থেকে শাকিব খানকে আটক করা হয়।’

এর আগে এ ঘটনার নায়ক মিলন পাশাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তার কাছ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘তবে গ্রেপ্তার সাব্বির ও শাকিব খানকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসে।

‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে তারা দুজনসহ আরও ছয়জন দত্তকান্দি হাইস্কুল মাঠে যায়। সেখানে সুবর্ণাকে তার ফুফাতো ভাই সাব্বিরের সঙ্গে খেলতে দেখে। তখনই তারা সুবর্ণাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে।

‘পরিকল্পনা অনুযায়ী মিলন পাশা ও সাকিবসহ বাকি আসামিরা সাব্বিরকে বলে তার মামাতো বোন সুবর্ণাকে মধ্যশিমুলিয়ার চরে নিয়ে যেতে। সন্ধ্যার পর সাব্বির ও শাকিব মিলে সুবর্ণাকে কৌশলে মধ্যশিমুলিয়ার চরে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই বাকি আসামিরা অবস্থান করছিল। এরপর সুবর্ণার হাত-পা চেপে ধরে আটজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সুবর্ণা নিস্তেজ হয়ে যায়। তখন সে কাঁদতে কাঁদতে ঘটনাটি সবাইকে বলে দেয়ার কথা বলে। এ অবস্থায় আসামিরা নিজেদের বিপদের কথা চিন্তা করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক সুবর্ণার গলায় তারই ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর শরীরে মাটি ছিটিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।’

পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওদিকে পরিবারের লোকজন চিন্তা করে, সুবর্ণা ওই স্কুলের পাশে তার ফুফুর বাড়িতেই আছে। এ জন্য শুরুতে তারা খোঁজাখুঁজিও করে নাই। পরদিন তার মরদেহ পাওয়া যায়।

‘পিবিআই তদন্তকালে সুরুতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখে সুবর্ণাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার গোপনাঙ্গে রক্ত দেখে তা আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়। আলামতের ডিএনএ পরীক্ষায় তার পরণের পোশাকে সিমেনের (বীর্য) নমুনা পাওয়া যায়। এতেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সুবর্ণাকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার।

এ বিভাগের আরো খবর