মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে কলেজটির অধ্যক্ষের নামে লিখিত অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলার কলিম উল্লাহ কলেজের শিক্ষার্থীরা রোববার দুপুরে নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে অবস্থা নিয়ে আন্দোলন করে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে চার থেকে ছয় হাজার টাকা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে কথা বলে জানা যায়, উন্নয়ন ফির নামে তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির চাইতে অনেক বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীরা এত বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করতে পারছেন না।
তারা জানায়, ফরম পূরণের শেষ সময় চলে আসায় বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে তারা তাদের আপত্তির বিষয়টি কলেজটির অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকদের জানিয়েছে। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত না করায় বাধ্য হয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এসেছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গজারিয়া উপজেলার ইউএনওর কাছে তারা একটি লিখিত অভিযোগ করে। নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা বোর্ডগুলোর নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞান শাখার পরীক্ষার্থীদের মোট ২ হাজার ৬৮০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার জন্য ২ হাজার ১২০ টাকা করে ফরম পূরণের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো পরীক্ষার্থীর চতুর্থ বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকলে এ ফির সঙ্গে অতিরিক্ত ১৪০ টাকা যুক্ত হবে। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার কোনো শিক্ষার্থীর নৈর্বাচনিক বিষয়ে ব্যবহারিক থাকলে বিষয় প্রতি আরও ১৪০ টাকা যোগ হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে কলেজটির অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দীন মর্তুজা বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে তারা অধিকাংশ টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থী। ফরম পূরণে চার হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে তা সত্যি নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত টাকার বাহিরে যে টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে তা হলো বেতন ও উন্নয়ন ফির টাকা। উন্নয়ন ফি বাবদ ১ হাজার ১৪০ টাকার মতো আদায় করা হচ্ছে। আমরা এমপিওভুক্ত কলেজ। এ টাকাটুকু যদি না আদায় করি, তাহলে কলেজ কীভাবে চলবে?’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন রোববার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। আমাদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও এ বিষয়ে সম্পর্কে অবগত আছেন। আমি সোমবার সকালে কলেজটি পরিদর্শনে যাব। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
গজারিয়ার ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আমার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’