বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

  • প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ   
  • ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০৯:০৫

ডিসি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি টাকা।

দিনভর গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের আলোচিত মসজিদটিতে এ পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা শনিবার রাত দুইটার দিকে জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

তিনি আরও জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদের ৯টি দানবাক্স প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। রমজানের কারণে এবার বাক্সগুলো খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে ডিসি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।

টাকা গণনা কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া যায়।

ঐতিহাসিক এ মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা পাওয়াটা তখন ছিল রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

মসজিদে নগদ টাকা ছাড়াও নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। দানবাক্সে টাকার সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান অলংকারও।

পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডিসি। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া।

মেয়র পারভেজ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লিদের চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল।

তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়। তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করে থাকেন এ মসজিদে। যারা দান করতে আসেন, তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর