বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেষ কর্মদিবসে সদরঘাট ছেড়েছে যাত্রীভর্তি লঞ্চ

ঈদ উপলক্ষে সদরঘাটে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে যাত্রীর চাপ। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস মঙ্গলবার নদীবন্দরটি থেকে যাত্রীভর্তি লঞ্চ গেছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে।

পদ্মা সেতুর কারণে ঈদ উপলক্ষে নৌপথে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা অনেকটা কাটতে শুরু করেছে। রাজধানীর একমাত্র নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুলসংখ্যক ঘরমুখী মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন।

ঈদ উপলক্ষে সদরঘাটে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে যাত্রীর চাপ। ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস মঙ্গলবার নদীবন্দরটি থেকে যাত্রীভর্তি লঞ্চ গেছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে।

লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকেই ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে নৌপথের দিকে ঝুঁকছেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নানা কারণে নৌপথে অচলাবস্থা তৈরি হলেও ঈদ উপলক্ষে যাত্রীরা লঞ্চ যাত্রাতেই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজছেন। এরই মধ্যে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট বুকিং শেষ হয়ে গেছে।

চাঁদ রাতে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে জানিয়ে লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সে জন্য বিশেষ লঞ্চগুলোও প্রস্তুত।

তারা আরও বলছেন, ঈদযাত্রা শুরুর পর থেকে মঙ্গলবারের মতো এত ভিড় হয়নি। আগামী দুই দিন যাত্রীর চাপ থাকবে। অর্থাৎ ঈদের দিন রাত পর্যন্ত মানুষ বাড়ি যাবে।

আজ সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে অফিস শেষে অনেকে বাড়ির পথে যাত্রা করেছেন। শেষ বিকেলে বিভিন্ন রুটে বাড়ে যাত্রীর চাপ। ভোলা, হাতিয়া, চর মুন্তাজ, চাঁদপুর, বরগুনাগামী লঞ্চগুলোর সামনে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায়।

অন্য রুটের তুলনায় বরিশালগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীর চাপ একটু কম। বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের উপস্থিতি আরও বাড়ে। লঞ্চগুলোকে যাত্রী বোঝাই করে নিয়েই টার্মিনাল ছাড়তে দেখা যায়।

কী বলছেন যাত্রী ও নৌযান সংশ্লিষ্টরা

শেষ কর্মদিবসে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কেবিনে সীমিত পরিমাণ ভাড়া বাড়ানো হলেও তা অস্বাভাবিক নয় বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

টার্মিনালে কথা হয় রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা পুলিশ সদস্য নাহিদ হাসানের সঙ্গে, যিনি বলেন, ‘এবার ঈদে আমার ছুটি নেই। তাই আগেভাগেই পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছি। গতকালই ফোন করে কেবিন বুকিং দিয়ে রেখেছিলাম। এ জন্য তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। টার্মিনালে এসেও দেখলাম আগের থেকে ভোগান্তি কম।’

ঢাকা-চরফ্যাশন (ভোলা) রুটে চলাচলকারী এমভি কর্ণফুলী-৪-এর সুপারভাইজার মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজ তুলনামূলক যাত্রীর চাপ একটু বেশি। ডেক-কেবিনের টিকিট প্রায় সব বিক্রি হয়েছে। আমাদের অগ্রিম টিকিট সব বিক্রি হয়ে গেছে। শেষ দিন যাত্রীর চাপ আরও অনেক বাড়বে।’

এমভি ফারহান-৫ লঞ্চের কেবিন বয় লিটন ইসলাম বলেন, ‘বরিশালগামী লঞ্চগুলো রাত ৯টা থেকে ঘাট ছাড়া শুরু করে। এরই মধ্যে ডেকের যাত্রীরা জায়গা করে নিয়েছেন। কেবিনের টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে।

‘সারা বছর তো যাত্রী তেমন হয় না। নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই লঞ্চ ছাড়বে। সেই সময়ে স্পেশাল লঞ্চগুলো ঢুকবে। ঈদ উপলক্ষে এই কয়েক দিনই যাত্রীর চাপ থাকবে।’

এমভি ঈগল-৩ লঞ্চের কেরানি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ভাড়া আগের মতোই আছে। অনেকে ২০ রমজানে অগ্রিম টিকিট কেটেছেন। তারা আজ (মঙ্গলবার) ও আগামীকাল (বুধবার) যাবেন। যাত্রীদের সুবিধার্থে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

সুন্দরবন-১১ লঞ্চে কথা হয় পটুয়াখালীর বাউফলগামী যাত্রী নাজমুন নাহারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাসেও যাই, আবার লঞ্চেও যাই। ঈদ উপলক্ষে ফ্যামিলি নিয়ে লঞ্চে যাওয়াই আরামদায়ক। কেবিন নিয়েছি। সবাই মিলে আনন্দ-উল্লাস করতে করতে যাব।’

প্রিন্স আওলাদ লঞ্চের স্টাফ সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘রাত ৯টার পর থেকে বরিশালের সব লঞ্চ ছেড়ে যাবে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রী থাকলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না।

‘ভিড় আছে, তবে পদ্মা সেতু হওয়ার পর আগের মতো ভিড় হয় না। আগে মানুষকে তীব্র যানজট পেরিয়ে সদরঘাটে আসতে হতো। এখন আর সেভাবে ভিড় হয় না।’

সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘লঞ্চে আজ বিকেল থেকে ভিড় বেড়েছে। যাত্রী না থাকার কারণে যেসব লঞ্চ বন্ধ ছিল, চাপ বাড়ায় সেসব চলবে। কেবিনের অগ্রিম টিকিট শেষ, তবে ডেকে ধারণক্ষমতার কম যাত্রী নেয়া হচ্ছে।’

ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাটে দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে প্রায় ১০০টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। রাতে প্রায় সমানসংখ্যক লঞ্চ ঘাট ছাড়বে। এদিন প্রতিটি নৌরুটে গড়ে প্রায় আটটি করে লঞ্চ ছেড়ে গেছে।’

ঈদের আগের রাতে যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী লঞ্চ থাকবে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা। এ ছাড়াও পর্যাপ্তসংখ্যক বিশেষ ট্রিপের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।

টার্মিনাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সদরঘাট নৌ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ‘আজ যাত্রীর চাপ আগের থেকে বেড়েছে। পুলিশ, র‌্যাবসহ আনসার সদস্যরা যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

‘সন্দেহজনক কিছু দেখলে তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। যাত্রীর চাপ বাড়লে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর