সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া হচ্ছে আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়টি কোনো ছোট ঘটনা নয়। কাজেই দিন-তারিখ দিয়ে এটার সমাধান সম্ভব নয়। তবে সম্পূর্ণ ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
‘পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে নাবিকদের যেন দেশে আনতে পারি- সেই লক্ষ্যে কাজ চলেছে। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। তবে আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নৌপরিবহন অধিদফতর আন্তর্জাতিক এলাকায় কাজ করে। তারাও খোঁজ-খবর রাখছে। সার্বিক বিবেচনায় পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে নাবিকদের যোগাযোগ হচ্ছে। নৌপরিবহন অধিদফতরও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। কথাবার্তা হচ্ছে। তারা ভালো আছেন। বিষয়টি অল্প কিছুদিনের মধ্যে সমাধান হবে।’
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: নিউজবাংলা
নৌ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দস্যুদের সঙ্গে আলোচনাটা কীভাবে হয় সেটা একটা বিষয়। এ ধরনের আলোচনা করার জন্য কিছু কিছু সংগঠন আছে, মানুষ আছে। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
‘আমরা কখনও দস্যুদের মোকাবিলা করিনি। কাজেই আমরা বলতে পারবো না যে কীভাবে আলোচনা হচ্ছে। যারা দস্যুদের সঙ্গে চলাফেরা করেন, সেই মানুষদের মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, “এর আগে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে যখন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ আটকে গেল, তখনও এ ধরনের কিছু সাহায্য নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়েছিল। ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। তার সহায়তায় আমরা সেটির দ্রুত সমাধান করতে পেরেছিলাম।”
‘নৌপথে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি নেই’
নৌপথে ঈদযাত্রা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নৌপথে চাপ থাকলেও কোনো ভোগান্তি নেই। ঈদযাত্রার জন্য সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। কারণ তিনিই ১৯৯৬ সালে প্রথম মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির (বহুমুখী সংযোগ) কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশে তিনিই এই বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছেন।
‘আকাশপথ, রেলপথ ও সড়কপথ যা দেখেন, যে পরিমাণ অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে- তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়েই হয়েছে। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে ছিল দক্ষিণাঞ্চল। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলকে যুক্ত করেছে পদ্মা সেতু।
মজু চৌধুরী ঘাটে যানজটের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে অতিরিক্ত চাপ ছিল। কিন্তু ভোগান্তি ছিল না। যাদের ভোগান্তির কথা বলছেন, তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলবেন, এটিই ঈদের আনন্দ। এখন কোনটা আমি ধরব বলেন?
‘আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী যথাসাধ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। এর মধ্যে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতেই পারে। কারণ আমরা মানব কাঠামোর উন্নয়নে এখনও ওই জায়গায় যেতে পারিনি।’