চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলায় গুরতর আহত হয়েছেন পেশায় দন্ত চিকিৎসক বাবা কোরবান আলী। বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন তিনি।
শুক্রবার নগরের আকবর শাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওইদিন বিকেলে আকবর শাহ থানার পশ্চিম ফিরোজ শাহ হাউজিং এলাকার জে লাইন দিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে আলী রেজা। এ সময় তিনি দেখতে পান দুই স্কুলছাত্রকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মারধর করছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আলী রেজা ৯৯৯-এ ফোন করেন। তার ফোন কলে পুলিশ এসে একজনকে ধরে নিয়ে যায়।
পরে ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারি কিনতে বের হন আলী রেজা। তখন তাকে পেয়ে মারধর করতে থাকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন তার বাবা। এ সময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
আহত অবস্থায় প্রথম তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় শনিবার আলী রেজা বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আকবর শাহ থানায় মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- মো. সামির, মো. রিয়াদ, সোহেল ওরফে বগা সোহেল, মো. আকিব, মো. অপূর্ব, মো. নিশান, মো. রাজু, মো. সাগর, মো. বাবু, মো. রাজু, মো. সংগ্রাম ও মো. সাফায়েত। এছাড়া আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে অজ্ঞাতপরিচয়কে আসামি হিসেবে রাখা হয়।
জানতে চাইলে আকবর শাহ থানার ওসি গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘দুই ছাত্রকে কিশোর গ্যাং সদস্যরা মারধর করলে তারা আলী রেজার সাহায্য চান। তাদের বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন তিনি। আর তাকে বাঁচাতে এসে তার বাবা গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় করা মামলার পর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
পুলিশ তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরে অন্তত ২০০ কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। একেক দলে রয়েছে ৫ থেকে ১৫ জন। পুলিশের হিসাবে, নগরজুড়ে এসব গ্যাংয়ের সদস্যসংখ্যা অন্তত ১ হাজার ৪০০।
পুলিশ বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন ‘বড় ভাই’। গত ৬ বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাং জড়িত বলে জানায় পুলিশ। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি।