বান্দরবানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের নির্মূলে কাজ শুরু করেছে। পাহাড়ের পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কম্বিং অপারেশন চলবে। ইতোমধ্যে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) মূল ঘাঁটিসহ অধিকাংশ আস্তানা সেনাবাহিনী দখলে নিয়েছে।
সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ রোববার দুপুরে বান্দরবান সেনা জোন মাঠে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী পাহাড়ে কম্বাইন্ড অপারেশন কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। সন্ত্রাস নির্মূল না পর্যন্ত এই অভিযান চলমান থাকবে।
‘কেএনএফ যখন তাদের সবকিছু জাহির করে ফেলেছে তখন তারা ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কম্বাইন্ড অপারেশন শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার। বাংলাদেশের জনগণের জন্য, শান্তির জন্য যা করণীয় তা করতে হবে এবং আমরা তা-ই করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে দায়িত্বগুলো রয়েছে বিশেষ করে যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া তা পেশাদারত্বের সঙ্গে পালন করব।
‘ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে দুটি অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এগুলো লুটে নেয়া অস্ত্র কিনা তা জানতে পারিনি। তারা বাংলাদেশের ভেতরে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য যেসব ঘাঁটি তৈরি করেছিল তার সবক’টি আমরা দখলে নিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, পাহাড়ে সক্রিয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমা ইউএনও অফিস সংলগ্ন মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে। পরে তারা সোনালী ব্যাংকের টাকাসহ ডিউটিরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা যাওয়ার সময় রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে।
পরদিন বুধবার থানচি উপজেলা শহরের সোনালী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় হামলায় চালিয়ে নগদ অর্থ নিয়ে যায়। রুমার ঘটনার পরপর যৌথ অভিযান চালিয়ে (৪ এপ্রিল) রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখার অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে র্যাব ও সেনাবাহিনী।
অরপদিকে রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংকে হামলা, টাকা ও অস্ত্র লুটসহ ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট সাতটি মামলা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র্যাব এ ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সম্পৃক্ততার কথা বললেও মামলায় সংগঠনটির কোনো নেতা বা সশস্ত্র হামলাকারী হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ১৮০ জনকে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রুমা ও থানচির ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট সাতটি মামলা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।