কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ তিনজনের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে।
উপজেলার রৌমারী থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনের নামে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা করা হয়।
এর আগে ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন নির্যাতনের শিকার দৈনিক সংবাদের রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি আনিছুর রহমান।
আসামিরা হলেন উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাবাড়ি এলাকার সাখাওয়াত হোসেন সবুজ (৫৭), নুরুন্নবী (৩৯) ও জাকির হোসেন (২৮)।
মামলার বরাতে জানা যায়, সাংবাদিক আনিছুর রহমান গত ৯ মার্চ লোকমুখে জানতে পারেন মাদক কারবারি নুরুন্নবীর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় তার তত্ত্বাবধানে থাকা যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজের সেচ পাম্পঘর তল্লাশি করে মেঝের মাটি খুঁড়ে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
বাড়িতে অভিযানের জন্য পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন সাংবাদিক আনিছুর রহমান, এমন অভিযোগ করেন সাখাওয়াত হোসেন সবুজ ও নুরুন্নবী।
এ ছাড়াও ২০২১ সালে কর্তিমারী বাজারে ‘যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়’ লেখা দুটি সাইনবোর্ড টানিয়ে জায়গা দখল করা হয়। ঘর নির্মাণের পর দখল করা জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে কার্যালয়টি ভাড়ায় দেন আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত।
দখলের সময়কার ও বর্তমান অবস্থার দুটি ছবি গত মঙ্গলবার দুপুরে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন সাংবাদিক আনিছুর। এর জের ধরে ওই দিন রাতে তারাবির নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে কর্তিমারী বাজারে তার ওপর হামলা চালান আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত, নুরুন্নবী ও জাকির হোসেন।
একপর্যায়ে বেধড়ক মারপিটসহ শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয় ওই সাংবাদিককে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতে সাংবাদিক আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াতসহ তিনজনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন, যেটি পরবর্তী সময়ে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
মারধরের শিকার সাংবাদিক আনিছুর রহমান বলেন, ‘যাদুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাখাওয়াত ও মাদক কারবারি নুরুন্নবীসহ তার লোকজন আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা বলেন, ‘সাংবাদিক আনিছুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
রৌমারী থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় তিনজন ও আরও কয়েকজনের নামে মামলা করা হয়েছে। আসামমিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’