ঈদুল ফিতর আসতে আর কদিন বাকি। ছুটির দিন ছাড়াও তাই রাজধানীর শপিংমল ছাড়িয়ে ফুটপাতেও এখন জমে উঠেছে ঈদ বাজার। প্রতিবারের মতো কেনাকাটার উৎসগুলোতে এবারও উপচে পড়া ভিড়।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, মোহাম্মদপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার ক্রেতাদের চাপ দেখা গেছে। তবে অনেক ক্রেতা বলছেন, এবার দাম বেশি হওয়ায় ফুটপাতের ঈদ মার্কেট থেকে শপিং করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন তারা।
বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে শামীমা ইয়াসমিন নামে এক ক্রেতা নিউজবাংলাকে বলেন ‘বসুন্ধরা সিটিতে এসেছিলাম শপিং করতে। দুই একটা কিনেছিও। কিন্তু সাধ্যের মধ্যে না হওয়ায় সবার জন্য কিনতে পারিনি। তাই মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট যাচ্ছি। নিউমার্কেটে তো ঢোকার উপায় নেই। ভাবলাম ছুটির দিনে ভিড় বেশি হবে। আজ শপিং সেরে ফেলি। কিন্তু আজও পা রাখা যাচ্ছে না।’
গ্রামে থাকা পরিবারের জন্য শপিংয়ে এসেছেন মাসুদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা সিটি থেকে বরাবরই ঈদ শপিং করি। কিন্তু এবার সব ব্র্যান্ডেই দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি মনে হচ্ছে। তবুও কিনলাম।’
ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দ্য
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ফুটপাতই একমাত্র ভরসা-এই কথার প্রচলন আগে থাকলেও এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন রূপ। শুধু স্বল্প আয়ের না, সব শ্রেণির মানুষই ছুটছেন ফুটপাতে।
রাজধানীর শ্যামলী, মোহাম্মদপুর এলাকার ফুটপাতে জমজমাট ঈদ মার্কেট। শ্যামলীতে আনোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি পরিবারের সবার জন্যই কিনি প্রতি ঈদে। আত্মীয় স্বজনদেরও উপহার দিই তাই অনেক বেশি কেনাকাটার জন্য বড় শপিংমলে যাওয়ার সাধ্য হয়ে ওঠে না। তবে ফুটপাতের দোকানগুলোতে এখন অনেক ভালো মানের পণ্য পাওয়া যায়। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এখান থেকে কিনতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।’
একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরিরত সুমাইয়া আফরিন বলেন, ‘অফিস থেকে বের হয়েই কেনাকাটা করতে এলাম। নিজের জন্য আর ছোট ভাইবোন গ্রামে থাকে। ওদের জন্য কিনবো। আমি কৃষি মার্কেট অথবা মিরপুর ১০ নাম্বার থেকে কিনি সব সময়। এখানে জামা-জুতো থেকে শুরু করে কসমেটিকস এবং গহনাও ম্যাচিং করে কম দামে নিতে পারি।’
বিক্রেতারা যা বলছেন
ক্রেতারা বলছেন, পোশাকের দাম এবার বেশি রাখছেন-এই প্রশ্নে শপিংমলের একজন বিক্রেতা বলেন, ‘সুতার দাম বেশি হওয়ায় ফেব্রিকের দামও বেশি। যে দামে কিনি তার চেয়ে কিছুটা বেশি না রাখলে তো লাভ ছাড়াই বিক্রি করতে হবে। ব্যবসা লসে যাবে। সব কিছুরই তো দাম বেশি। আমরা কী করব।’
কাওসার নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘যতটা বলা হচ্ছে, তত বেশি না। আমরাও খুব বেশি লাভে বিক্রি করতে পারতেছি না। কেনা দামে তো আর দিয়ে দিতে পারি না।’
ফুটপাতের বিক্রেতারা বলছেন, আমাদের বেচাকেনা প্রতিবারই ভালো। সব জায়গায় দাম বাড়লেও ফুটপাতে খুব বেশি দাম বাড়ে না। সবারই সাধ্যের মধ্যে থাকে।
মনসুর নামে ফুটপাতের এক বিক্রেতা বলেন, ‘ফুটপাত সব সময়ই জমজমাট। ঈদের সময় তো কথাই নাই। গাড়ি কইরা আইসাও অনেকে কিইনা নিয়া যান কাপড়চোপড়। ঈদের সময় বেচাকেনায় আমরাও ব্যস্ত হইয়া যাই।’
ফুটপাতে নিরাপদেই সবাই বেচাকেনা করতে পারছেন বলে জানান কয়েকজন ক্রেতা-বিক্রেতা। তেমন কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি এবার।