নিরীহ নারী-শিশু ও সাধারণ ফিলিস্তিনিদের পর পশ্চিমা বিশ্বের ত্রাণকর্মীদেরও যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, ইসরায়েলে সেসব অস্ত্রের সরবরাহ বন্ধ হবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম স্মরণসভা শেষে ইসরায়েলি হামলায় বুধবার যুক্তরাজ্য, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও পোল্যান্ডের নাগরিকসহ ৭ জন ত্রাণকর্মীর নিহতের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ হামলায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা, নৃশংসতা ও মানুষ হত্যার মহোৎসব থামছেই না। সেখানে ত্রাণকর্মীদেরও হত্যা করা হয়েছে। এটি কল্পনারও বাইরে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকেও তোয়াক্কা করছে না ইসরায়েল। আমি আশা করব, এই ঘটনার পর পশ্চিমা বিশ্বের বোধোদয় হবে এবং তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সরকার যেকোনো যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।
‘অবশ্যই আমরা দুই রাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করি, কিন্তু ১৯৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যেই সেখানে শান্তি নিহিত। অন্যথায় সে অঞ্চলে কখনও শান্তি স্থাপিত হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, যারা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে, সেসব অস্ত্র যে নিরীহ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যায় ব্যবহৃত হচ্ছে, এমনকি তা দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের ত্রাণকর্মীদেরও হত্যা করা হচ্ছে, এরপর তারা ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে।’
এর আগে স্মরণসভায় সম্প্রতি ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা সাপ্তাহিক গণবাংলার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম ও তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সঙ্গে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন তিনি।
ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অবদানের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা রাজনীতির নামে আগুন-সন্ত্রাস করে, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। এরা রাজনীতিক নয়, এরা দুর্বৃত্ত। এদেশে বিএনপি-জামায়াত যারা আগুন-সন্ত্রাস করেছে, এখনও ওঁৎ পেতে আছে। তাদের যারা অর্থের যোগান দেয়, তারা দুর্বৃত্তদের নেতা।’
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি এবং সাপ্তাহিক গণবাংলা পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিমের সভাপতিত্বে ও এমএ বাশারের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, প্রয়াত আতাউর রহমানের কন্যা ফারদিন রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য মাহমুদ আল প্রিন্স, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান সুমন সরদার বক্তব্য দেন।
বঙ্গবন্ধু অ্যাকাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল, যুবলীগ নেতা মানিকলাল ঘোষ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠান, বঙ্গবন্ধু দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মাহবুব হোসেন প্রমুখ প্রয়াতের স্মৃতিচারণ করেন।