পাঁচ দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে রোববার চট্টগ্রাম বিভাগীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
বুয়েটে মধ্যরাতে বহিরাগত নিয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের প্রবেশের অভিযোগ তুলে পাঁচ দাবিতে দুই দিন ধরে অবস্থান এবং রোববারসহ তিন দিন ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিণত করা হবে, এটা যাতে না হয়, আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ রকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বুয়েটে সেদিন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারব না, এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?’
মতবিনিময় সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ পারবে না। আমরা এমপি, মন্ত্রী সাহেবরা যদি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকি, তাহলে বিনা প্রতীকে নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য নেত্রী করেছেন, তা সার্থক হবে। কেউ ক্ষমতার দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।
‘যার নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে করবেন। সে স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। যদি কোনো অনিয়ম মনে করে, তারা ব্যবস্থা নেবে।’
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। কাজেই আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ভালোভাবেই চলছে সবকিছু। এর মধ্যে দায়িত্বশীলদের এমন কিছু কথাবার্তা দলকে সংকটে ফেলে।
‘ফ্রি স্টাইলে যা কিছু বলবেন—এটা তো আওয়ামী লীগ নয়। দলের গঠনতন্ত্র, নিয়মকানুন আছে। এগুলোর অ্যাকশন আমরা নেব। ইতিমধ্যেই কিছু অ্যাকশন ও নেয়া হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের জবাবটা আমরা মোটাদাগে বলি, পাঠক কখনও ঘোষক হতে পারে না। তাহলে এম এ মান্নান, সন্দীপ এরাও তো স্বাধীনতার ঘোষক। তারপরও বড় কথা এ ঘোষণার বৈধ অধিকার কার ছিল? বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কারও স্বাধীনতা ঘোষণার অধিকার ছিল না। সে ম্যান্ডেট সত্তরের নির্বাচনে জনগণ তাকে দিয়েছিল।
‘বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার লেগ্যাসি। বঙ্গবন্ধুর পর আমাদেন অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামের লেগ্যাসি হিসেবে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। এই জনপদে সবার মৃত্যু হবে নশ্বর পৃথিবীতে কিছুই অবিনশ্বর নয়। আজকে বঙ্গবন্ধু নেই, শেখ হাসিনাও থাকবেন না, কিন্তু তাদের উত্তরাধিকারের কোনো দিওও মৃত্যু হবে না।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বিভিন্নজন কেউ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেন, আবার কেউ ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেন। সেই পাকিস্তানি আমল থেকে যে ভাষায় আইয়ুব খান কথা বলেছে, আজকে সেই ভাষায় কথা বলছে বিএনপি।
‘তাদের সব ইস্যুই মার খেয়েছে ভোটে পরাজিত হয়ে। এখন তাদের ইস্যু ভারত বিরোধিতা। অ্যান্টি ইন্ডিয়া ফোবিয়া তৈরি করার ইস্যু খুঁজে নিয়েছে।’