কক্সবাজারের উখিয়ায় পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে বনরক্ষার অভিযান পরিচালনার সময় মাটিখেকোদের ডাম্পার ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন এক বন কর্মকর্তা।
উপজেলার দোছড়ি বনবিটের হরিণমারা লালুর বরোঘাটা এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো সাজ্জাদুজ্জামান সজল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন বিভাগে যোগ দেন।
তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের বিট কর্মকর্তা ছিলেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের ভিটিকান্দি গ্রামের শাহজাহান মাস্টারের ছেলে সাজ্জাদুজ্জামান এক মেয়ের বাবা।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, দোছড়ি বন বিটের অধীনে হরিণমারা লালুর বরোঘাটা এলাকায় রাতের আঁধারে ছৈয়দ আলমের নেতৃত্বে পাহাড় কেটে ডাম্পার ট্রাকে করে মাটি পাচারের খবর পেয়ে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদ ওই স্থানে অভিযান করতে যান। ওই সময় মাটি পাচারে ব্যবহৃত ডাম্পার ট্রাক দিয়ে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সাজ্জাদুজ্জামান নিহত হন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন তার সহকর্মী আলী।
উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসাইন বলেন, ‘সাজ্জাদুজ্জামানের মরদেহ উখিয়া থানায় আছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলমান।
‘ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সৈয়দ আলম পলাতক। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে উখিয়া বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বলেন, ‘সাজ্জাদুজ্জামানের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হবে।’
বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, ‘পাহাড়খেকোদের সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে। আমরা একজন দক্ষ বন কর্মকর্তাকে হারালাম।’
নিহত সাজ্জাদুজ্জামানের বাবা শাহজাহান মাস্টার বলেন, ‘আমরা স্বামী, স্ত্রী দুজনেই শিক্ষক ছিলাম। পরম যত্নে ছেলেকে একজন আদর্শবাদী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলাম। আমার ছেলেকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা অমানবিক।
‘সরকারি কাজ করতে গিয়ে যদি সরকারি কর্মকর্তা এভাবে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়, তাহলে সরকার নিহতের পরিবারকে কী জবাব দেবে? এ ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করি আমি।’