বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) মধ্যরাতে বহিরাগত নিয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, ‘এই কমিটি আজকে (শনিবার) থেকে কাজ শুরু করেছে। এখন রোজার মাস। তাদের রোজা রেখে নামাজও পড়তে হবে। সব মিলিয়ে তাদের আরও অনেক সময় দেয়া উচিত থাকলেও আমরা ৮ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছি উনাদের।’
বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান উপাচার্য সত্য প্রসাদ।
শিক্ষার্থীরা সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে সকাল সাতটা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আন্দোলন করে তাদের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি শেষ করেন। পাঁচ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ নেতাদের ঢুকতে সহযোগিতা করার অভিযোগে বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের সিট বাতিল করা হয়েছে। ইমতিয়াজ রাহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবির বিষয়ে উপাচার্য সত্য প্রসাদ বলেন, ‘কোনো তদন্ত না করে যদি কাউকে শাস্তি দেয়া হয়, তাহলে সেই শাস্তি কোর্টে গেলে টিকবে না। আবার এই তদন্তের পর ছাত্রকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দিতে হবে।
‘সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে। নিয়মের বাইরে আমরা কিছু করতে পারব না। এ জন্য একটু সময়ও প্রয়োজন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা যেভাবে বলছে সকাল নয়টার মধ্যে বা ১২টার মধ্যে, এটি তো সম্ভব না।’
উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আজকে পরীক্ষা বর্জন করেছে, কিন্তু আমরা বলেছি পরীক্ষা চলবে। পরীক্ষা হয়েছেও, কিন্তু শিক্ষার্থীরা কেউই পরীক্ষা দিতে আসেনি, তারা অ্যাবসেন্ট ছিল, তবে তারা বর্জন না করে স্থগিতের আবেদন করলে আমরা সেটি বিবেচনা করতাম। তাদের উচিত ছিল পরীক্ষা পেছানোর দাবি করা। শিক্ষার্থীরা এখানেও ভুল করেছে।’
এই পরীক্ষা আবার নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আবেদন করলে সেটি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।’
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের যে দাবি ছিল, সেটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের পদত্যাগের যে দাবি, সেটি হবে না। কারণ উনার কোন গাফিলতি ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ অবশ্যই অনভিপ্রেত। শিক্ষার্থীদের দাবি অবশ্যই যৌক্তিক। কারা ঢুকেছে ও কারা ঢুকতে সহযোগিতা করেছে, সেটি শনাক্ত করতে সময় লাগবে। আমাদের তো সেই সময় দিতে হবে।
‘কেন সেদিন বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়া হলো, সেটি নিয়ে আমরা সিকিউরিটি কর্মকর্তাকে চিঠি দিব। তাদের তো ঢুকতে দেয়া উচিত হয়নি। সিকিউরিটি গার্ডদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।’