স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী ও পুরুষ কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নেন। তারপর লিংরোড এলাকার উদ্দেশে রওনা হন তারা। সেখানে পৌঁছে চালক জাহেদ হোসাইনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গহীন পাহাড়ে। মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে চাওয়া হয় ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
এ ঘটনার পর ছায়া তদন্ত শেষে ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে র্যাব ১৫-এর একটি দল স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে।
রামু থানাধীন রাজারকুলের উমখালীর গহীন পাহাড়ি এলাকায় ব্লক রেইড অভিযান পরিচালনা করে সোমবার ভোরে অপহৃত সিএনজিচালককে উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণকারীকে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র্যাব ১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
অপহৃত ২৫ বছর বয়সী জাহেদ হোসাইন উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের গায়ালা মারা এলাকার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে।
অপহৃত সিএনজি চালকের বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে রামুর কলঘর বাজার যাবার জন্য জাহেদের অটোরিকশা ভাড়া করে ওই দুইজন। লিংকরোড এলাকায় পৌঁছানোর পর তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা হয়।
পরবর্তীতে জাহেদের ফোন থেকেই তার পরিবারকে একাধিকবার ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সর্বশেষ অপহরণকারীরা জানায়, ২৫ মার্চ রাতের মধ্যে টাকা না দিলে জাহেদকে কেটে টুকরো টুকরো করে লাশ পাঠিয়ে দেয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে র্যাবের শরণাপন্ন হন জাহেদের পরিবারের সদস্যরা।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, অপহরণের পর থেকেই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযানের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। এ সময় পাহাড়-অরণ্যবেষ্টিত এলাকায় অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করে কয়েক শ’ গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীদের আস্তানা ঘিরে ফেলে সেখানে ব্লক রেইড অভিযান চালায় র্যাব। এক পর্যায়ে সোমবার ভোরে অভিযানকারীদের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে জাহেদকে ফেলে রেখে সটকে পড়েন অপহরণকারী চক্রের বেশিরভাগ সদস্য। এ সময় দুর্গম পাহাড়ি ঢাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহেদকে উদ্ধারের পাশাপাশি এক অপহরণকারীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ওরফে ইকবাল। ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক রামুর উমখালী এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে র্যাব।
দুর্গম পাহাড়ে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা কক্সবাজার র্যাব ১৫-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব ১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেনের নির্দেশে আমরা এই অভিযানের পরিকল্পনা করি। কক্সবাজার থেকে এই অপহরণ চক্র নির্মূলে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’