মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সুপার বোর্ড কারখানার আগুন দীর্ঘ ৮ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রাত ৯টার দিকেও ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে আগুন নেভাতে গিয়ে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- ইসমাইল, শরীফুল ও হিরন।
গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদীতে টি.কে. গ্রুপের মালিকানাধীন এই কারখানার গোডাউনে রোববার দুপুর ১টার দিকে আগুন লাগে।
আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে আনা হয়েছে রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট। ছবি: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির পাটের গোডাউনে আগুন দেখতে পান কর্মরত শ্রমিকরা। সেখান থেকে নদীতে নোঙর করে রাখা একটি পাটখড়ি বোঝাই ট্রলারে আগুন লেগে যায়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে অগ্নি নির্বাপনের কাজ শুরু করে।
তবে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে পার্টিকেল বোর্ড, পাটখড়ি, প্লাস্টিকের দরজা ও প্লাস্টিকের পাইপের মতো দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে সরু রাস্তা আর পানির অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের।
ঢাকা বিভাগ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘দুপুর ১টা ১২ মিনিটে আমরা অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই। প্রথমে আমাদের গজারিয়া স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে অগ্নি নির্বাপনের কাজ শুরু করে। পরে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আরও দশটি ইউনিট অগ্নি নির্বাপনের কাজে যোগ দেয়।
‘বিকেল ৪টার দিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিশেষ ফোম টেন্ডার এবং রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট নিয়ে আসি আমরা। আমাদের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
আগুন নেভাতে গিয়ে আহতদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলা
বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ‘কারখানাটিতে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এ ব্যাপারে আমরা একাধিক বার সতর্ক করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি।’
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। বেলা আড়াইটা থেকে আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।
সবশেষ তথ্যে জানা গেছে, সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে পৌনে ৭টা পর্যন্ত একটানা বৃষ্টির ফলে তীব্রতা কমলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রাত ৯টার দিকেও কারখানায় আগুন জ্বলছে।