কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত পাঁচজনের মধ্যে চারজন তিন দিন পর মুক্ত হয়ে ফিরে এসেছেন।
রোববার এক লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা বাড়ি ফিরছেন বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। তবে পুলিশ বলছে, মুক্তিপণের বিষয়টি তারা জানেন না। চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
অপহৃতদের পরিবার জানিয়েছে, টেকনাফের হ্নীলার পানখালী পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই পাঁচ কৃষককে বৃহস্পতিবার অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধরে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এদের একজন মুক্তিপণ দিতে না পেরে অপহরণকারীদের কাছে বন্দি আছেন এখনও।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক চাষির ভাষ্য, ‘ছেলেরা পাহারা দেয়ার জন্য খেতের কাছে বাড়ি বানিয়ে থাকে। এখান থেকে গত বছর দুজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।’
মুক্তিপণ দিয়ে অপহৃতদের ফেরত আনার বিষয়টি রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেন। তারা জানান, চারজনকে পুলিশ চিকিৎসার কথা বলে হেফাজতে নিয়েছে।
মুক্তিপণ দিয় যারা ফিরছেন তারা হলেন, হ্নীলা পানখালী এলাকার ফকির মোহাম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), শাহাজানের ছেলে জিহান (১৩), ছৈয়দ উল্লাহর ছেলে শাওন (১৫) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান (১৫)। এ ছাড়া আব্দুর রহিমের ছেলে মো নুরকে (১৮) এখনও ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ‘মুক্তিপণ দিয়েছে কিনা জানি না। তবে পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। রাতে অভিযানে গিয়ে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তারা এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আরেকজনকে উদ্ধারের অভিযান চলছে।’
অপহরণকারীদের হাতে বন্দি থাকা মো. নুরের মা খুরশিদা বেগম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আমার ছেলেকে অস্ত্রধারীরা ধরে নিয়ে গেছে। তবে কে বা কারা নিয়ে গেছে এখনও জানা যায়নি। কিন্তু একটি নম্বর থেকে কল করে ছেলের মুক্তিপণ চেয়ে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। আমরা খুব গরিব, এত টাকা কীভাবে কোথায় পাব? তার সঙ্গে যারা ছিল চারজন তারা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে তাদের উদ্ধার করতে পারবে।’
স্থানীয়রা জানান, এর আগে ১০ মার্চ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে সাতজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এক দিন পর তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন। কিন্তু ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহৃত ছয় বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ এখনও বাড়ি ফেরেনি।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক ১০৩টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের শিকার ৫২ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা।