বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নেত্রকোণায় কীটনাশকমুক্ত চালকুমড়ার বাম্পার ফলন

  • সালাহ উদ্দীন খান রুবেল, নেত্রকোণা   
  • ২২ মার্চ, ২০২৪ ১২:১৯

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় নেত্রকোণায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হচ্ছে।

নেত্রকোণায় এবার চালকুমড়ার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে ভালো মূল্য পাওয়ায় চাষিরাও বেশ খুশি। কীটনাশকমুক্ত এ চালকুমড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ঢাকাসহ সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণায় নানাবিধ কারণে শত শত হেক্টর জমি অনাবাদি অর্থাৎ পতিত থাকতো। তাই ‘এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণায় কৃষি বিভাগ নানান রকম প্রচার প্রচারণা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করে। কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দিয়ে তাদের অনাবাদি পতিত জমিতে বিভিন্ন জাতের শস্যসহ চালকুমড়া চাষাবাদে উৎসাহিত করা হয়।

গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় নেত্রকোণায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ আশা করছে, নেত্রকোণা জেলায় এ বছর আনুমানিক ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টন চালকুমড়া উৎপাদিত হবে।

এদিকে জেলার বারহাট্টা উপজেলার ধলপুর, সিংধাসহ প্রায় ৩০টি গ্রামে এবার ধান চাষের পাশাপাশি শাকসবজি চাষে ভালো লাভবান হওয়ায় এসব এলাকার কৃষকরা চালকুমড়ার পাশাপাশি লাউ, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাটাসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ করছেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, এবার প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫ থেকে ২৬ টন চালকুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, প্রতি ১০ শতক জমিতে ৫০ থেকে ৬০ মন চালকুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে। স্থানীয় পাইকারদের কাছে প্রতিটি চালকুমড়া গড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করা হয়। যার ফলে এক কাঠা জমি থেকে কৃষকদের আয় হচ্ছে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতীয় নূরুল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক শফিকুল আলম বলেন, বিগত কয়েক বছর এ সমস্ত সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় শত শত একর জমি অনাবাদি কিংবা পতিত থাকতো। এখন সরকারের কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে অনাবাদি, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনায় ধানসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া আমরা যারা কৃষক তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় বা আবাদি, অনাবাদি ও পতিত জমিতে চালকুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের লাউ, শসা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ নানান ধরনের রবিশস্য আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছি।’

কৃষক শফিকুল জানান, তিনি গত বছর দেড় একর জমিতে চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়াসহ ফুলকপি চাষাবাদ করে প্রায় ৯ লাখ টাকা আয় করেন। এ বছর আড়াই একর জমিতে চালকুমড়া পাশাপাশি টমেটো, বেগুন ও বাদাম চাষ করা হয়েছে।

নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের কালিহালা গ্রামের বর্গাচাষি কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ কাঠা পতিত জমি বর্গা নিয়ে চালকুমড়া চাষ করি। চলতি সময়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকার চালকুমড়া বিক্রি করেছি। আরও বিক্রি করা যাবে।’

জেলার বারহাট্টা উপজেলার ধলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম ও আব্দুর রশীদ জানান, এ বছর ৩০ কাঠা জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হয়। ভালো ফলনও হয়েছে। স্থানীয় পাইকাররা জমি থেকেই মন প্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছে।

নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বসতবাড়ির আশপাশের জমিজমা এবং অনাবাদি পতিত জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজির আবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগ স্থানীয় কৃষকদের নানান ধরনের পরামর্শ, প্রণোদনা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কীটনাশকমুক্ত ফসলাদি উৎপাদনে কৃষকদের ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করা হয়।

তিনি জানান, পতিত জমিতে চালকুমড়ার বাম্পার ফলন হওয়ায় বিভিন্ন জাতের শাকসবজি আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। ফলে নেত্রকোণা জেলায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর