কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বেসরকারি আবেদীন হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় গর্ভে মারা যাওয়া সন্তানের বাবা আজহারুল ইসলাম খান ভৈরব থানায় অভিযোগটি করেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসকরা হলেন আমিন উদ্দিন আহম্মেদ, উম্মুল খায়ের মাহমুদা ও ফারজানা রহমান।
ভুক্তভোগী নারী পৌর শহরের চন্ডিবের খাঁ বাড়ির আজহারুল ইসলাম খানের স্ত্রী প্রমি খানম।
অভিযোগের বরাতে জানা যায়, প্রমি খানম অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই আবেদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক আমিন উদ্দিন আহম্মেদ বুধবার তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন। রিপোর্ট দেখে হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক উম্মুল খায়ের রোগীর স্বজনদের জানান, সন্তান প্রসব হতে আরও এক মাস সময় বাকি আছে। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে স্বজনরা শুক্রবার তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, “চিকিৎসক উম্মুল খায়ের মাহমুদা বলেন, ‘রোগীর অবস্থা বেশি ভালো না। রোগীকে আইসিইউতে ভর্তি করা লাগতে পারে। আপনারা রোগীকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যান।’” তখন তড়িঘড়ি করে রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঢাকার একটি হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চিকিৎসক দেখেন, তিন থেকে চার দিন আগেই গর্ভের সন্তান মারা গেছে।
স্বজনদের ভাষ্য, চিকিৎসকদের দেয়া ভুল তথ্যের জন্য অনাগত শিশুটির মৃত্যু হয়।
ওই নারীর স্বামী আজহারুল ইসলাম খান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হয়। আমি টাকা-পয়সা ইনকাম করছি পরিবারের জন্য। আজ (শনিবার) আবেদীন হাসপাতালের ডাক্তারদের ভুল তথ্য দেয়ার জন্য আমি আমার নবজাতক সন্তান হারিয়েছি।
‘একাধিকবার আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরেও তারা সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। শুধু পরীক্ষার নামে টাকা নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, “ঢাকায় নেয়ার পর কয়েকটা পরীক্ষা করে ডাক্তার বলেন, ‘আপনার স্ত্রীর পেটে আপনার সন্তানের হার্টবিট চলছে না। পরে সিজার করে জানা যায়, বাচ্চাটি মারা গেছে। আমি আবেদীন হাসপাতালের ডাক্তারদের বিচার চাই।”
এ বিষয়ে জানতে ডা. উম্মুল খায়ের মাহমুদার মোবাইল ফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘ভুল চিকিৎসার বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে আমাদের হাসপাতালে সিজার অপারেশনটি হয়নি। ঢাকায় একটি হাসপাতালে নবজাতকটি মারা গেছে।’
ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পেয়ে রাতেই হাসপাতালটি পরির্দশন করে এসেছি। সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’