ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামে সরকারি খালের ওপর ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা সেতু। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অর্থে ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরিকল্পিতভাবে চলছে এর নির্মাণ কাজ।
সেতুটি ভবিষ্যতে নানামুখী সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে উল্লেখ করে এর নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীর পক্ষে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় সরকার দফতর (এলজিইডি) রাজাপুর উপজেলা শাখায় পৃথক দুটি লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মামুনুর রশীদ নোমানী স্বাক্ষরিত ওই আবেদনপত্রের কপি নিউজবাংলার হাতে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনাদি নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী নৌপথে সেতু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএ’র ছাড়পত্র নেয়া বাধ্যতামূলক।
‘অথচ রাজাপুরে সরকারি খালে আইন অমান্য করে এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএর প্রত্যয়ন ছাড়াই ব্যক্তি উদ্যোগে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুটি অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে নির্মাণ হতে যাওয়ায় ভবিষ্যতে এটি ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
‘এছাড়াৱ অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি নির্মাণ হলে তা খালের পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি করবে। আটকে যাবে মাঝারি আকারের নৌযান চলাচল। ক্ষতি হবে প্রান্তিক কৃষকদের।’
অভিযোগকারী এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের মৃত আতাহার আলীর দুই ছেলে সাইদুল ও কামরুল সেতুটি নির্মাণ করছেন। সেতুটি নির্মাণ হলে সরকারি অর্থে খালটি খননের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। কমে যাবে খালের নাব্য।
ঝালকাঠি বারের সদস্য অ্যাডভোকেট মানিক আচার্য বলেন, ‘এলজিইডি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানিসম্পদ পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠান ও (ডব্লিউএআরপিও) পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া সরকারি খালে সেতু নির্মাণ করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং একটি ফৌজধারী অপরাধ।’
তবে সেতু নির্মাণকারী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে নিজেদের খালে ব্রিজ বানাইতেছি। এতে সরকারের ক্ষতির কোনো কারণ দেখছি না। তাই অনুমোদন নেয়ার প্রয়োজন মনে করিনি।’
এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার সেতু নির্মাণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে করা আবেদনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
ইউএনও ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘আবেদন পেয়ে থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।’