মাত্র দেড় মিনিটে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ২৩১ গ্রামের নাম বলতে পারেন এক সাবেক শিক্ষক।
উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকের নাম মো. আক্তারুজ্জামান। গত বছর শিক্ষকতা থেকে অবসরে গেছেন তিনি।
হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আক্তারুজ্জামান দেড় শতাধিক গান জানেন, জসিম উদ্দিনের কবর কবিতার ১১৮ লাইন মুখস্থ বলতে পারেন। বলতে পারেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ-এর ভাষণ। এ ছাড়া ১ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে বলতে পারেন কাপাসিয়া উপজেলার ২৩১ গ্রামের নাম। ৩০ সেকেন্ডে বলেন দেশের সব জেলার নাম।’
তিনি বলেন, আক্তারুজ্জামান স্কুলে বাংলা পড়াতেন। ভালো শিক্ষক ছিলেন। এর আগে তিনি উপজেলার মৈশন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।আলোচিত আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের কথা হয়। তখন তিনি ধানের বীজতলায় কাজ করছিলেন। যে শিক্ষকের গল্প মানুষের মুখে মুখে তাকে দেখা যায় একেবারেই সাদামাটা। তিনি বলেন, আমি ধানখেতে কাজ করছিলাম। আপনাদের কথা শুনে আসলাম।
কীভাবে এত কম সময়ে সবগুলো গ্রামের নাম বলতে পারেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে গ্রাম দেখেছি আর মুখস্থ করেছি।’এ কথা বলে এক নিশ্বাসেই গ্রামের নামগুলো বলে ফেলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। আমি এখনো লেখাপড়া করি। আমি আরও বেশি জানতে চাই। বর্তমানে মাদক যুব সমাজকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এজন্য শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। লেখাপড়া করে মানবিক মানুষ হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
আক্তারুজ্জামান-নাছিমা দম্পতির তিন সন্তান। তাদের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্ত্রী নাছিমা খাতুন বলেন, টানাপড়েনের সংসার কোনো রকমে চলে যায়। তবে আমার স্বামী খুব মেধাবী। তিনি অনেক কিছু জানেন।
ছেলের এই মেধায় মুগ্ধ তার নব্বই বছর বয়সী মমতাময়ী মা। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে যা পারে তা আর কেউ পারে না। ছেলেটা অনেক মেধাবী, সে অনেক কিছু জানে। অনেক গান জানে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে শুনে মুখস্থ বলতে পারে। দেশের সব জেলার নাম বলতে পারে।’
আক্তারুজ্জামানের ছাত্র মতিউর রহমান বলেন, স্যারের অনেক গুণ। আক্তার স্যারের বড় গুণ হলো প্রায় দেড় মিনিটে ২৩১ গ্রামের নাম বলতে পারেন।
কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমানত হোসেন খান বলেন, আমি সাবেক ওই শিক্ষককে পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা দিতে চাই। এছাড়া পরিবারের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হবে।