মুশফিকুর রহিমের পছন্দের দেশ শ্রীলঙ্কা। যাদের পেলেই তিনি জ্বলে ওঠেন আপন মহিমায়। ২ সেঞ্চুরি আর ৩ ফিফটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ১০৭২ রান করেছেন তিনি। ওয়ানডের সর্বোচ্চ ১৪৪ রানও লঙ্কানদের বিপক্ষেই। এটি ছিল গতকালের ম্যাচের আগে মুশফিকুর রহিমের পরিসংখ্যান। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি মুশফিকের ব্যাট থেকে। তবে প্রথম ওয়ানডেতে মুশফিককে ছাপিয়ে গেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের দুইজনের ব্যাটেই অবশ্য ম্যাচটা জিতেছে বাংলাদেশ।
২৫৬ রানের মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৩ রানেই নেই টাইগারদের টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটার। রান করার আগেই ফিরেছেন ওপেনার লিটন দাস। সমান ৩ রান করে ফিরেছেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার আর তৌহিদ হৃদয়। তখন সহজ লক্ষ্যটাও বেশ কঠিনই মনে হচ্ছিল টাইগারদের জন্য।
দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ইনিংসটি খুব বেশি বড় করতে পারেননি রিয়াদ। ১৬তম ওভারে ৩৭ বল থেকে ৩৭ রান করে ফিরে যান তিনিও। তখন জয়ের আশার প্রদীপটা নিবু নিবু করছে বাংলাদেশের। সেখান থেকে জয়ের মশাল জ্বালালেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিকুর রহিম। হাঁকালেন দুর্দান্ত এক হার না মানা শতক। আর শান্তকে দারুণ সঙ্গ দিলেন মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। তিনিও খেললেন হার না মানা ৭৩ রানের ইনিংস। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করেই জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজের শুভ সূচনা করল টাইগাররা।
তবে টাইগারদের জয়ের সূচনাটা করে দিয়েছিলেন বোলাররা। লঙ্কানদের টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটারকে ফিরিয়ে দারুণভাবে চেপে ধরেছিল তানজিম হাসান সাকিব। এরপর সে পথেই হেঁটেছেন আরও দুই পেসার তাসকিন আহমেদ আর শরিফুল ইসলাম। এই তিন পেসার মিলেই শিকার করেছেন ৩ উইকেট।
টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের দগদগে ক্ষত নিয়েই ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাও দারুণ করেছিলেন লঙ্কান ওপেনাররা। পাওয়ার-প্লে থেকে দুইজন মিলে তুলেছেন ৭১ রান। ভয়ংকর হতে যাওয়া এই জুটিকে থামান তানজিম হাসান সাকিব। শুধু জুটিকেই থামাননি, লঙ্কানদের টপ অর্ডারকে পুরো ভেঙে দিয়েছেন তিনি। শুরুটা করেন আভিস্কা ফার্নান্দোকে (৩৩) দিয়ে। মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তাকে। পরের ওভারে এসেই ফেরান আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে (৩৬)। পরের ওভারে তানজিমের শিকার সামিরা বিক্রমা (৩)।
লঙ্কানদের বাকি ব্যাটাররা ব্যর্থ থাকলেও দল লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস আর জানিথ লিয়ানাংগে। দুইজনই তুলে নিয়েছিলেন অর্ধশতক। ৭৫ বল থেকে ৫৯ রান করে তাসকিনের বলে উইকেট দিয়ে ফেরেন মেন্ডিস। আর ৬৯ বল থেকে ৬৭ রান করে শরিফুলের বলে উইকেট দেন লিয়ানাংগে। শেষ পর্যন্ত ৪৮ ওভার ৫ বলে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২৫৫ রান তোলে লঙ্কানরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেও দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিকুর রহিম। নাজমুল শান্ত খেলেন ১২৯ বল থেকে ১২২ রানের হার না মানা ইনিংস। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। তিনি অপরাজিত থাকেন ৮৪ বল থেকে ৭৩ রানে। তাদের দুর্দান্ত ইনিংসে ৫ ওভার বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।