সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খান মঙ্গলবার ইফতারের পর স্ত্রী মিনা আজমিনকে শেষ মেসেজ পাঠান। এর আগেই অবশ্য জাহাজটির দখল নিয়েছে জলদস্যুরা।
স্ত্রীকে তিনি লেখেন, ‘আমাদের মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। ফাইনাল কথা হচ্ছে, এখানে যদি টাকা না দেয়, আমাদের মেরে ফেলবে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিও।’
বুধবার সকালে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত কেএসআরএম কার্যালয়ে যান জিম্মি নাবিকদের স্বজনরা। জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন জানান তারা।
কার্যালয় থেকে বের হয়ে তারা জানান, আতিক উল্লাহ খানের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। স্বামীর খবরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাতেই নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
আতিকের মা শাহনুর বেগম বলেন, ‘আমরা যখন ইফতার করছিলাম; এর মধ্যেই ভয়েস মেসেজে আমার ছেলে জানায়, তাদের সবার মোবাইল নিয়ে নেয়া হচ্ছে। জাহাজটি সোমালিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
নাবিক আতিকের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায়। মা, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি থাকতেন শহরের নন্দন কানন এলাকায়।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই জাহাজের নাবিক আসিফুর রহমান ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে আমরা আক্রমণের শিকার। আমরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদে আছি। আমাদের প্রার্থনায় রাখুন।’
জাহাজের চতুর্থ প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ মঙ্গলবার রাত আটটায় সবশেষ মুঠোফোনে মা জোছনা বেগমকে মেসেজ পাঠান।
তাতে তিনি লেখেন, ‘আম্মু, ওরা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। এখনও ইফতার করি নাই। তারা খাবার দিলে ইফতার করব। কবির গ্রুপের চাচার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যেভাবেই হোক, আমাদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেন, আম্মু। এটাই শেষ কথা।’
জোছনা বেগমও বুধবার সকালে এসেছিলেন আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের কার্যালয়ে।
নাবিক আইনুল হকের মা লুৎফে আরা বেগমও এক সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন কবির গ্রুপের কার্যালয়ে। তিনিও আকুতি জানিয়েছেন, যাতে তার ছেলেকে ফিরে পান।
কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজে নাবিকরা সুস্থ ও নিরাপদে আছেন। জাহাজটি এখন সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি দস্যুদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দস্যুরা এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি। তাদের পাশে আছি।’